বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনলাইন পরীক্ষার সিদ্ধান্ত’ প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতেই নতুন এ সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন তারা। তাই এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে আগামী ২৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়ার দাবি তাদের। একইসঙ্গে চলতি মে মাসের মধ্যে হল-ক্যাম্পাস খুলে না দেয়া হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেয়া হয়েছে।
রবিবার ফেসবুক গ্রুপ ‘অবিলম্বে সকল বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে হবে’-এর মডারেটর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানে হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আমরা জানতে পেরেছি, ইউজিসি অনলাইনের পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শর্ত সাপেক্ষে নির্দেশনা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চাইলে অনলাইনে বর্ষ সমাপনী বা সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু করতে পারে। আমরা বাস্তবতা বিবর্জিত ও উচ্চশিক্ষা ধ্বংসকারী এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করছি।
‘‘অনালাইনে পরীক্ষা কার্যক্রম চালানোর মত কোন বাস্তবতা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নেই। আমরা সকলেই অবগত আছি, আমাদের দেশের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা খুবই দুর্বল যা দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্পূর্ণই অসম্ভব। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশকে অনলাইন কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব না। আবার শিক্ষকরাও অনলাইনের সকল কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে দক্ষ নন।’’
এছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছে উপযুক্ত ডিভাইসের অভাব, ইন্টারনেট খরচ বহন করার সক্ষমতা সকলের নেই। যেখানে অনলাইন ক্লাসগুলোয় শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ অনুপস্থিত থেকে যায়, সেখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগুলো অনলাইনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ মে) সাত শর্তে অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তবে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষার্থী যদি অনলাইনে পরীক্ষা দিতে না চায়, সেক্ষেত্রে তাদের চাপিয়ে দেয়া যাবে না বলে কমিশনের শর্তে উল্লেখ করা হয়।
শিক্ষার্থীদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনালাইনে পরীক্ষা পদ্ধতির বিষয়ে এখনো জানা না গেলেও যেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ আগে থেকেই এ কার্যক্রমে বাইরে রয়েছে; সেক্ষেত্রে অনলাইন পরীক্ষা পদ্ধতি যাইহোক এটা এ বাস্তবতাই সম্পূর্ণ অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত। মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতেই অনলাইন পরীক্ষার নতুন এ পদ্ধতির চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। এভাবে অনলাইন ক্লাসের বাইরে যেরকম একটি বড় অংশ পড়ে ছিল, ঠিক একইভাবে অনলাইন পরীক্ষার ক্ষেত্রেও একটি অংশ বাদ পড়ে যাবে।
এতে আরও বলা হয়, পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা আমাদের দাবির কথা সরকারের কাছে ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তুলে ধরার জন্য ভার্চুয়াল প্রতিবাদ চালু রাখবো। যদি মে মাসের মধ্যে হল-ক্যাম্পাস খুলে শিক্ষা-কার্যক্রম স্বাভাবিক করা না হয় তাহলে আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে গিয়ে সরাসরি মাঠে আন্দোলন চালিয়ে যেতে বাধ্য হবো।