Site icon The Daily Moon | Popular Bangla News | National | International | Education | Entertainment | Religion | Employment

করেনার মধ্যে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা না নেয়ার পক্ষে বিশিষ্টজনেরা

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে শুধুমাত্র মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা নয়, সকল ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা না নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন একাধিক শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও চিকিৎসকরা। সম্প্রতি দেশে আশঙ্কাজনকভাবে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওযায় এসব পরীক্ষা স্থগিতের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

বিশিষ্টজনেরা বলছেন, একজন চাকরি প্রার্থী কিংবা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর ভর্তি কিংবা চাকরির পূর্বে তার বেঁচে থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। এসব প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিতে গিয়ে তারা যদি করোনা সংক্রমিত হন সেক্ষেত্রে তাদের পরিবারের এসব প্রার্থীদের পরিবারের একটা বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই কিংবা সংক্রমণ কমে আসলে এসব পরীক্ষা নেয়ার কথা বলছেন তারা।

এদিকে অনলাইনে নেয়ার উপায় না থাকায় চলতি শিক্ষাবর্ষে সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষাটিও ৪১তম বিসিএস পরীক্ষার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট তারিখেই অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

আগামী ২ এপ্রিল মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি বলেছেন, যে রকম কিছু দিন আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের বিসিএস পরীক্ষা হলো সেভাবেই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর বাইরে উপায় নেই, অনলাইনে নেয়া যাচ্ছে না। সেটা স্বাস্থ্যবিধির ভেতরে ব্যবস্থাপনা একটা ফ্যাক্টর। সেক্ষেত্রে বসার জায়গাটি, শারীরিক দূরত্ব এবং বিভিন্ন শিফটের ব্যাপার থাকতে পারে। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে করতে পারি সেই নির্দেশনা দিয়ে দেবো।

তবে করোনাভাইরাসের এ ঊধ্বগতির মধ্যে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা না নেয়া পক্ষেই বিশিষ্টজনেরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, যেসব পরীক্ষায় প্রচুর সংখ্যক পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে থাকে সেসব পরীক্ষায় ঝুঁকি নিয়ে না এখন আয়োজন না করাই ভালো। তারপরও যদি কোনো কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নিতে চায় তাহলে সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেই পরীক্ষা নেওয়া বাঞ্চনীয়।

তিনি বলেছেন, এখন যারা ভর্তি পরীক্ষার্থী আছে তাদের যতি আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আসি তাহলে এ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়ে কি করবে যদি সংক্রমিত হয়ে যায়! সরকরি চাকরি পেয়ে সে কি করবে তার উপর যদি জীবনের ঝুকি এসে যায়। এটা একজন শিক্ষার্থীর পরিবারের জন্য বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে। মূলত এ বিষয়গুলোই কর্তৃপক্ষের বিবেচনা করার আছে।

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়ে আমাদের নতুন সময়ের সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান বলেছেন, সরকারের কাছে আমার অনুরোধ আগামী ২ এপ্রিল হেফাজত ইসলামের রাজনৈতিক কর্মসূচি আছে। এই কর্মসূচি কীভাবে পালন হবে, এই কর্মসূচি জনজীবনে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করবে কিনা এবং পরীক্ষার্থীদের জন্যেও কোনো নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করবে কিনা, এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে দেখা প্রয়োজন।

তিনি বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশে করোনার প্রকোপ যেভাবে বাড়ছে, সবাই এটাকে বিপজ্জনক পরিস্থিতি বলছেন। এই রকম অবস্থায় পরীক্ষার্থীরা তাদের আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রের শহরে একদিন আগে এসে পরীক্ষা দিয়ে আবার ফিরে যাওয়া, এই রকম একটা সময়ে এমন যাতায়াত এবং পরীক্ষা চলাকালীন সময়েও করোনা সংক্রান্ত নিরাপত্তা কতটা সুচারুভাবে নিশ্চিত করা যাবে, এই বিষয়টিও পুনর্বিবেচনার বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ডা. আব্দুন নূর তুষার বলেছেন, সবকিছু জলের মতো পরিষ্কার হওয়ার পরেও দেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ন্ত্রণকারী কর্তাব্যক্তিরা তাদের সিদ্ধান্তে অটল আছেন ‘স্বাস্থ্যবিধি’ মেনে ২ এপ্রিলে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা নেবেন। এ পরীক্ষার পেছনে তাদের যুক্ত হলো ‘এখন পরীক্ষা না নিলে নাকি ৫ বছর পর পর্যাপ্ত ইন্টার্ন ডক্টর পাওয়া যাবে না’।

তিনি বলেন, জোর করে এই ভর্তি পরীক্ষা না নিয়ে সরকারী নির্দেশ অনুযায়ী গণজমায়েত সীমিত করে, করোনা নিয়ন্ত্রণে এনে সংক্রমনের হার অন্তত ৫%-এর নীচে গেলে পরীক্ষা আয়োজন করাই সংগত। রমজান মাস পার করে ২ মাস দেখে ৩ মাস পরীক্ষা পিছিয়ে দেয়াই সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত হবে।

Exit mobile version