মোছা: ফুলকুমারী নামে এক নারীর স্মার্ট কার্ড। অথচ এতে রয়েছে অপরিচিত এক পুরুষের ছবি। স্মার্ট কার্ডে এমন ভুলের চিত্র ধরা পড়েছে আলমডাঙ্গা উপজেলার বন্ডবিলে। আর এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিধবা ওই নারী। যার কারণে বিধবাভাতাসহ সরকারি অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এই অসহায় নারী।
ভুক্তভোগী ফুলকুমারী জানান, তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ডামোশ গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের স্ত্রী। বিয়ের কিছু দিন পর এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ফুলকুমারী। তার কিছু দিন পরই স্বামী হারিয়ে অল্প বয়সেই বিধবা হন তিনি। স্বামী হারিয়ে কন্যা সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ি আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার বন্ডবিল গ্রামে ফিরে আসেন ওই নারী। মেয়ের বিয়ে দিয়ে পরের বাড়িতে কাজ ও সরকারি ভাতা পেয়ে কোনোমতে জীবন চালাচ্ছিলেন। কিন্তু সরকারি নিয়মানুযায়ী ভোটার কার্ড স্মার্ট করেই বিপাকে পড়েছেন ফুলকুমারী।
সরকারি সকল নিয়ম মেনে হাতের ছাপ, চোখের ছাপ ও নিজের ছবি তুলিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করতে গিয়ে দেখেন তার কার্ডে নিজের ছবির জায়গায় অন্য এক অচেনা পুরুষের ছবি। ওই সময়ে স্মার্ট কার্ড বিতরণ কাজে নিয়োজিতদের কাছে তিনি ছবির বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো সমাধান না দিয়ে বরং তারা ওই নারীর হাতে নতুন-পুরোনো দুটি কার্ডই তুলে দেন।
কিছু দিন আগে ভাতাভোগীদের টাকা বিকাশের মাধ্যমে প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বিকাশ অ্যাকাউন্ট করতে গিয়ে ভোটার কার্ডে ছবির মিল না থাকায় বিপাকে পড়েন মোছা: ফুলকুমারী। কারণ দুটি কার্ডের নাম মোছা: ফুলকুমারী, পিতা- আজগার আলী, মাতা- শ্যামেলা বেগম, ঠিকানা- বন্ডবিলের মিল থাকলেও মিল নেই ছবিতে। ছবির মিল না থাকাই তিনি করতে পারেননি ভাতার টাকা সংগ্রহের অ্যাকাউন্ট, বাতিল হয়েছে তার ভাতা। শুধু ভাতা নয়, এখন সরকারি সকল কর্মকাণ্ডেই তাকে পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। বঞ্চিত হচ্ছেন সকল সুযোগ-সুবিধা থেকেই।
এ বিষয়ে তিনি নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করলে তারা ফুলকুমারীর কথা কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি। এখন এই স্মার্ট কার্ড হাতেই দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ফুলকুমারী।
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এম এস জি মোস্তফা ফেরদৌসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমি আমার নিজ অর্থায়নে ফুলকুমারীর স্মার্ট কার্ডের ভুল সংশোধনের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। আশা করি খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’