রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে মুজিবর রহমান (৪২) নামে এক ব্যক্তি মারা যান। হাসপাতালেই লাশের পাশে বসে কাঁদছিল তার ৭ বছরের মেয়ে মরিয়ম খাতুন। ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর অসহায় ওই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে নওগাঁ জেলা প্রশাসন।
আজ মঙ্গলবার (০৬ জুলাই) ভিডিওটি জেলা প্রশাসকের নজরে এলে তিনি পোরশা উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নে কলনীবাজার গ্রামে মৃত মুজিবর রহমানের বাড়ি খুঁজে বের করেন। পরিবারটিকে ১০ হাজার টাকা দেন তিনি। পরে একটি মুদি দোকান করে দেওয়ার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।
নওগাঁর জেলা প্রশাসক মো. হারুন অর রশীদ বলেন, ভিডিওটি ফেসবুকে দেখার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হামিদ রেজাকে ওই ব্যক্তির বাড়ি খুঁজে বের করে পরিবারের খোঁজখবর নিতে বলি। তার বাড়ি খুঁজে পাওয়ার পর দুপুরের দিকে তাৎক্ষণিক মৃত ব্যক্তির স্ত্রী তানজিলার হাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তাকে একটি মুদি দোকানও করে দেওয়া হবে।
জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে সর্দি-কাশি হাওয়ায় বাড়িতে থেকে ওষুধ খাচ্ছিলেন মুজিবর রহমান। কিন্তু সমস্যা বাড়তে থাকে; দেখা দেয় শ্বাসকষ্টও। এরপরই হাসপাতালে আনা হয়েছিল তাকে। কিন্তু বাবাকে সুস্থ করে আর বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারল না শিশুটি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ রকম বহু মৃত্যুর পেছনে আছে মানুষের বুকফাটা আর্তনাদ।
ছোট শিশু টি তার বাবার লাশের পাশে বসে কাদঁছে
Posted by অন্যরকম রাসেল on Monday, July 5, 2021
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী বলেন, ‘এখনও রাজশাহীর অবস্থা খারাপের দিকে। আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রচুর রোগী আসছে। কমবেশি সবারই সর্দি-জ্বর ছিল।’
তিনি বলেন, ‘সবাই প্রথমে ভাবে সাধারণ নিয়মে ওষুধ খেলেই সেরে যাবে। কিন্তু তারা যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেটা খুব কম মানুষই ভাবে। ফলে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসে তখন শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকে। কোন কোন সময় আমরা টেস্ট করারও সুযোগ পাচ্ছি না। মারা যাচ্ছে।’
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, গ্রামে বসবাস করায় করোনা সর্ম্পকে বেশিরভাগেরই ধারণা স্পষ্ট নয়। সে কারণে নমুনা পরীক্ষা বা চিকিৎসায় খুব বেশি আগ্রহী হন না। যখন অবস্থা সংকটাপন্ন হয় তখন হাসপাতালে আসেন। তখন অক্সিজেন ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।
তিনি বলেন, আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি চিকিৎসা দেওয়ার। কিন্তু সংক্রমণ কমানো না গেলে মৃত্যুহার কমানো যাবে না। এজন্য স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিকল্প নেই।