দৃষ্টিনন্দন নির্মানশৈলী দ্বারা নির্মীত আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ। সিরাজগঞ্জ-এনায়েতপুর সড়কের বেলকুচি পৌর সদরে অবস্থিত। মসজিদ ভবনটি যে কেউ প্রথম দেখলেই মনের অনুভুতি হবে, এ যেন সৃষ্টির সাথে সৃষ্টার এক অপূর্ব মেলবন্ধন। শুক্রবার (২ এপ্রিল) দেশের অন্যতম সেরা এই সৌন্দর্য্যমন্ডিত মসজিদটি জুমা’র নামাজের মধ্যে দিয়ে উদ্বোধন করা হবে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসের দিকে মুকুন্দগাতী গ্রামের কৃতি সন্তান শিল্পপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী সরকার বেলকুচি পৌর ভবন সংলগ্ন দক্ষিণে আড়াই বিঘা জায়াগার উপর তার ছেলে আল-আমান ও মা বাহেলা খাতুনের নামে “আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ” কমপ্লেক্স নির্মান কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। তিনি নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ কোটি টাকার বেশি ব্যায় করে নয়োনাভিরাম এ মসজিদটি নির্মান করেন। এটি নির্মানে সময় লেগেছে ৪ বছর। শুরু থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪৫ জন শ্রমিক কাজ করেছেন। রহমত গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী সরকার এ মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মান করেন। এ শিল্পপতি গত বছরের আগষ্ট মাসে ইন্তেকাল করেছেন। এরপর তার পরিবারের পক্ষ থেকে মসজিদের নির্মান কাজ চলমান রেখে শেষ করেছেন।
এ মসজিদে ছাই রংয়ের বিশাল আকৃতির মনোরম একটি গুম্বুজ রয়েছে। এছাড়া মেঝেতে সাদা রংয়ের ঝকঝকে তকতকে টাইলস ও পিলার গুলোতে মার্বেল পাথর জড়ানো। তৃতীয় তলায় গুম্বুজের সাথে লাগানো চায়না থেকে আনা একটি সহ অন্যান্য স্থানে বেশ কয়েকটি আলোজলমল ঝাঁড়বাতি লাগানো হয়েছে। দু’পাশে নির্মানাধীন ১১ তলা সমতুল্য (১১০ ফিট) উচ্চতার মিনার থেকে আজানের ধ্বণি জমিনে ছড়িয়ে পড়ছে। মসজিদের চারপাশে সাদা রংয়ের পিলার, সুউচ্চ জানালা, সাদাটে রংয়ের টাইলস। চত্বরে পরিকল্পিতভাবে লাগানো সবুজ ঘাস। চার পাশে রংবে রংয়ের লাইটিংয়ে রাতের বেলা এক অন্যরকম আবহের সৃষ্টি হয়। সব মিলিয়ে বেশ শান্ত পরিবেশ।
এখানে ইমাম ও মোয়াজ্জিনদের থাকার জন্য মসজিদের পাশে ১০ তলা ভবনে নিজস্ব কোয়ার্টার। পাঠাগার ও সৌচাগার রয়েছে। সেই সাথে মসজিদের প্রবেশ পথের দুই সিঁড়ির পাশে কাঁচে ঘেরা অটো ফিল্টার করা পানি দিয়ে ওজুর ব্যবস্থা আছে। এছাড়া ইতালি ও ইন্ডিয়া থেকে আনা উন্নতমানের মার্বেল পাথর সহ কাঠের কারুকাজে মসজিদের বিভিন্ন স্থানকে আকর্ষনীয় করতে নান্দনিক নকশার কাজ করা হয়েছে। বিশেষ করে মসজিদের সম্মুখের উচ্চ দুটি সিঁড়ি এবং ব্যতিক্রমী প্রবেশ পথ ও প্রধান ফটক যে কারও দৃষ্টি কারে। এই মসজিদটি নির্মানের পর এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিসহ সব ধর্মের মানুষ এখানে এসে তাদের দৃষ্টি জুড়িয়ে নেন। এখানে এক সাথে প্রায় ৫ হাজার মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। রাতে বেলা মসজিদ চত্বর এক অন্যরকম জান্নাতি পরিবেশ বিরাজ করে। যা নিজ চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না।
প্রথম দেখাতেই যে কারও দৃষ্টি কারে এ মসজিদটি। এটা নিছক উপাসনলয় নয়। দেশী-বিদেশী পর্যটকের কাছে এই মসজিদের নির্মানশৈলী বেশ আকর্ষনীয়। ব্যস্ত সড়কে যাতায়াতকারী যে কেউ প্রথম দেখাতেই থমকে দাড়ান। পৌর সদরে হওয়ায় ইতোমধ্যে মসজিদ কমপ্লেক্স ঘিরে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে।
একজন বলেন, আল্লাহুর ঘর নির্মানে আমরা কাজ করেছি। নিজেদের এখানে আমরা কোন প্রচার চাই না। মানুষ শান্তিতে নামাজ পড়বে তাতেই আমাদের শান্তি।