গত জুন মাসে আশুলিয়ার বোট ক্লাবকাণ্ডে আলোচনায় আসেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। সেসময় তিনি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন আহমেদসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ করেন। এরপর সাভার থানায় ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে তিনি মামলা করেন।
পরীমনির করা মামলায় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও উত্তরা ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট নাসির ইউ মাহমুদসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।নাসির ইউ মাহমুদের সঙ্গে গ্রেফতার অন্য চারজন হলেন অমি, লিপি, সুমি ও স্নিগ্ধা। এরা সবাই এখন জামিনে মুক্ত।
গত ৮ জুন রাতে বোট ক্লাবে হত্যাচেষ্টা ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে পরীমনির করা মামলা তদন্তে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসে। তদন্তকালে পুলিশ জানতে পারে পরীমনির করা অভিযোগ মিথ্যা। প্রভাবশালী আরও এক ব্যক্তির সঙ্গে পরীমনির ঘনিষ্ঠতার তথ্যও জানতে পারে পুলিশ। এমনকি নগ্ন ছবিতে অভিনয়, সমাজের উঁচুতলার মানুষদের ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায়ের তথ্য-উপাত্তও চলে আসে র্যাব গোয়েন্দাদের হাতে।
শুধু পুলিশি তদন্ত নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে মানুষ দেখতে পায় ৮ জুন রাতে বোট ক্লাবের মদের টেবিলে বেশ কয়েক জনের সঙ্গে শান্ত ভঙ্গিতে বসেই মদ পান করছেন পরীমনি। মোবাইল ফোনে ধারণ করা এই ফুটেজ প্রকাশ হওয়ার পর আড়াল থেকে সত্য বেরিয়ে আসতে থাকে। নাসির ইউ মাহমুদ ও অমিকে উদ্দেশ করে পরীমনির আবেগী সংবাদ সম্মেলনও যে সিনেমার কাহিনির মতো সাজানো ছিল ধীরে ধীরে তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এ অবস্থায় জামিনে মুক্তি পেয়েই মিথ্যা অপবাদে নিজের সামাজিক মর্যাদাহানির তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে সরকারের উচ্চ মহলে কথা বলেন নাসির ইউ মাহমুদ। পরীমনির বেপরোয়া চলাফেরার তথ্যপ্রমাণ পেয়েই তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একটি সূত্র জানায়, খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেই পরীমনিকে গ্রেফতারের নির্দেশনা আসে।
সিদ্ধান্ত পাওয়ার পরই (৫ আগস্ট) বুধবার বিকাল ৪টার কিছু পর সাদা পোশাকে র্যাবের ৩-৪ জন সদস্য পরীমনির বাসায় গিয়ে দরজা খুলতে বলেন। বাইরে অবস্থান নেয় র্যাবের পোশাকধারী সদস্যরা। কিন্তু পরীমনি দরজা না খুলে চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকেন। উলটো ফেসবুক লাইভে এসে অভিযানে যাওয়া র্যাব সদস্যদের পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ান। বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নানা নাটকীয়তার পর পরীমনিকে নিজেদের হেফাজতে নেয় র্যাব।