ভারতে ‘শালি ডিলস’ নামের একটি অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে সংখ্যালঘু নারীদের ছবিসহ প্রোফাইল তৈরি করে নিলামে বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। অ্যাপটিতে যেসব নারীকে নিলামে তোলা হয়েছে, তারা সবাই মুসলিম এবং অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার। তাদের প্রায় সবাই পেশায় সাংবাদিক, অধিকারকর্মী, শিল্পী বা গবেষক। -খবর বিবিসির
পেশাদার পাইলট হানা মোহসিন খানও অন্য অনেকের মতো হঠাৎ ওই নিলামের বিজ্ঞাপনে নিজেকে আবিষ্কার করেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে হানা খান বলেন, তাঁর এক বন্ধু তাঁকে একটি টুইট ফরোয়ার্ড করে এ ঘটনা জানান। টুইটের ওই লিংকে ক্লিক করার পর সেই লিংক তাঁকে সুল্লি ডিলস নামে একটি অ্যাপ এবং তাদের ওয়েবসাইটে নিয়ে যায়।
সেখানে ঢুকে তিনি দেখতে পান কয়েকজন পরিচিতসহ অনেক নারীর ছবি দিয়ে লেখা রয়েছে আজকের ডিল, অর্থাৎ তাদের আজ বিক্রি করা হবে। তিনি প্রথমেই অ্যাপটির যে পেজে ঢোকেন, সেখানে ছিল অচেনা এক নারীর ছবি। পরের দুই পাতায় তিনি তাঁর কয়েক বন্ধুর ছবি এবং প্রোফাইল দেখতে পান। তার পরের পাতাতেই দেখতে পান তাঁর নিজের ছবি এবং পরিচিতি।
হানা খান বলেন, ‘আমি নিজে ৮৩টি নাম গুনেছি। আরও হয়তো থাকতে পারে। তারা আমার ছবি নিয়েছে আমার টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে। কারণ ছবির সঙ্গে আমার টুইটারের ইউজার-নেম ছিল।’
এরপর পুলিশে অভিযোগ জানান হানা। টুইট করে বিষয়টি সামনেও আনেন। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার শিকার হয়েছেন দিল্লির সাংবাদিক ফাতিমা খানও। ২০২০ সালে দিল্লি সহিংসতার অনেক খবর প্রকাশ্যে এনেছিলেন ফাতিমা। পুলিশকে তিনি বলেছেন, তার ধারণা সে কারণেই তাকে নিশানা করা হয়েছে।
ওই অ্যাপে ব্যবহারকারীদের বলা হয়, অনলাইনে একজন সুল্লি কেনার এখনই সুযোগ। ভারতে উগ্র হিন্দুদের অনেক ট্রলে মুসলিম নারীদের অবমাননা করতে সুল্লি শব্দটি ব্যবহার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ৪ জুলাই অ্যাপে ওই মুসলিম নারীদের ছবি আপলোড করা হয়। অ্যাপটি হোস্ট করেছে গিটহাব নামের একটি ইন্টারনেট হোস্টিং প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান। ছবি আপলোড করা হয়েছে এমন কয়েকজন বিষয়টি নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় সোচ্চার হলে পুরো বিষয়টি সামনে আসে।