ফাতিহুল কাদির সম্রাট: ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর চলছে ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরতা। মুহুর্মুহু বোমার আঘাতে প্রকম্পিত হয়ে উঠছে ফিলিস্তিনের মাটি। মানুষ মরছে, ঝরছে রক্ত। নারকীয় হত্যাকাণ্ড চলেছে আল আকসা মসজিদের ভেতরেও। নিজদেশে পরবাসী ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই। অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইসরাইলে ছুঁড়ছে মামুলি রকেট। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ পশ্চিমা মিত্ররা এই রকেট হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। বিষয়টা এরকম, যে জীবন বাঁচাতে একজন অসহায় মানুষ হন্তারকের হাত কামড়ে দিয়েছে। বিচারে এই হাত কামড়ে দেওয়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে অপরাধ। আর হত্যাকারী হয়েছে ফরিয়াদী।
পবিত্র রমজান মাসে মুসলিম নিধনের এই নারকীয়তার বিরুদ্ধে ইসলামি রাষ্ট্রগুলো বিস্ময়করভাবে নীরবতা পালন করছে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান কেবল একটু শক্ত ভাষায় কথা বলেছেন। অন্য দু-একটা রাষ্ট্র জানিয়েছে মৃদু প্রতিবাদ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এজন্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। তবে ফিলিস্তিন ইস্যুতে বাংলাদেশ খুব প্রাসঙ্গিক রাষ্ট্র নয়। যারা মুখ খুললে কাজ হবে তারা মুখে এঁটে আছে কুলুপ।
বহু বছর থেকে ফিলিস্তিনিরা মার খাচ্ছে। এ নিয়ে ইসলামপন্থীদের ভূমিকা অভিসম্পাতে সীমাবদ্ধ। আর আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবী, সুশীল ও প্রগতিবাদীদের বেশিরভাগ বরাবর নীরব। ফিলিস্তিনিরা মুসলিম না হলে হয়তো তারা প্রতিবাদে সোচ্চার থাকতেন। ইসলাম ও মুসলিম শব্দের কাছে অনেকের মানবতা ফিকে হয়ে যায়। সাম্প্রতিক ঘটনায় একটি ভয়ংকর বিষয় লক্ষণীয়। এটি হলো কেউ কেউ ইসরাইলের পক্ষাবলম্বন করেছেন। কেউ বলছেন, ইহুদিরা দখলদার নয় কারণ তারা আগে থেকেই ঐ ভূখণ্ডের মালিক। আবার কেউ সামনে আনছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ফিলিস্তিনের কে কখন কীভাবে পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করেছিল তার খতিয়ান। বাংলাদেশের ভেতর থেকে ইসরাইলপ্রেমের এই নজির আর কখনো দেখা যায়নি। এটি একটি অভাবনীয় ও অভূতপূর্ব লক্ষণ।
ইসরাইল বা ইহুদিদের পরিচয়
হজরত ইব্রাহিমের দুই স্ত্রীর গর্ভে জন্ম নিয়েছিল দুই পুত্র। হাজেরার গর্ভে ইসমাইল আ. ও সারার গর্ভে ইসহাক আ.। ইসহাকের পুত্র ইয়াকুব আ.। ইয়াকুব আ. এর আরেক নাম ছিল ইসরাইল। ইসরাইল শব্দের অর্থ আল্লাহর বান্দা বা গোলাম। ইয়াকুব আ. এর বংশধররা বনি ইসরাইল নামে পরিচিতি পায়। বনি ইসরাইলরা ইহুদি নামেও বেশ পরিচিত। হজরত ইয়াকুব আ. এর এক স্ত্রীর নাম লাইয়ার। তাঁর গর্ভে জন্ম নেওয়া চার পুত্রসন্তানের অন্যতম ছিল ইয়াহুদা। এই ইয়াহুদাই ছিলেন ইউসুফ আ. কে কূপে নিক্ষেপ করার অন্যতম পরিকল্পনাকারী। ইয়াহুদার নামানুসারে এই বংশধারার আরেকটি নাম হয় ইয়াহুদি।
বনি ইসরাইল বা ইহুদিরা সাড়ে তিনশ বছর মিশর শাসন করেন। ফেরাউনদের উত্থানের পর ক্ষমতা হারায় ইসরাইলিরা। ফেরাউনদের ইসরাইলিদের নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনার মুখে হজরত মুসা আ. মিশর থেকে পালিয়ে তাদের নিয়ে সিনাই পর্বতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে হজরত দাউদ আ. জেরুজালেম জয় করলে বনি ইসরাইলারা ইহুদি নামকে প্রাধান্য দিয়ে সমৃদ্ধি লাভ করে।
কোরআন মাজিদে যে ২৫ জন নবি ও রাসূলের নাম এসেছে তাঁদের মধ্যে ১৩ জনই আবির্ভূত হন বনি ইসরাইল থেকে। কিন্তু এই জাতিটি সব সময় ছিল অবাধ্য ও দুষ্ট। আল্লাহ তাঁদের অবারিত অনুকম্পা দেখালেও তারা বরাবর নাফরমানি করেছে। “ইসরাইলের বংশধরেরা, তোমাদের উপরে আমি যে অনুগ্রহ করেছি, তা মনে করো। আমি অবশ্যই তোমাদেরকে সব জাতির থেকে বেশি অনুগ্রহ করেছি।” [আল-বাক্বারাহ ১২২] কোরআনে বনি ইসরাইল শব্দটি এসেছে ৪১ বার ও ইয়াহুদি শব্দটি এসেছে ৯ বার। ১১৪টি সূরার ৫০টিতে বনি ইসরাইলদের নিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আলোচনা হয়েছে। বনি ইসরাইল নামে একটি পূর্ণ সূরা নাজিল হয়েছে। বর্তমানে সারাবিশ্বে ইহুদিদের সংখ্যা এক কোটি ৪০ লাখের কিছু বেশি। যার মধ্যে ৭০ লাখ যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলে ৬১ লাখ ইসরাইলে বাস করে।
ইসরাইল রাষ্টের প্রতিষ্ঠা
সপ্তম শতাব্দীতে খলিফা হজরত উমর রা. এর সময় ইসরাইল মুসলমানদের আয়ত্তে আসে। ১০৯৯ সালে এটি খ্রিষ্টানদের দখলে যায়। দীর্ঘ ক্রুসেড যুদ্ধের পর সালাহউদ্দিন আইয়ুবির নেতৃত্বে ১১৮৭ সালে ফিলিস্তিন আবার মুসলমানদের অধীনে চলে যায়। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ইসরায়েল মিশরের মামলুক শাসকদের নিয়ন্ত্রণে আসে। ১৫১৭ সালে এ ভূখণ্ড তুরস্ককেন্দ্রিক উসমানীয় খিলাফতের অধীনস্থ হয়। দীর্ঘ সময়ের প্রেক্ষিতে ইহুদিরা ইউরোপ ও আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ে।
ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মূল কুশীলব ব্রিটেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুরস্কের উসমানীয় সাম্রাজ্যের পতনের পর ইসরাইল ১৯১৭ সালে ভূখণ্ডটি ব্রিটিশরা তাদের অধীনে নিয়ে নেয় এবং নাম রাখে ‘মেন্ডেটরি প্যালেস্টাইন’। ১৮৯৭ সাল থেকেই ইহুদিরা চেয়েছিল নিজেদের জন্য আলাদা একটি রাষ্ট্র গড়ে তুলতে।
ব্রিটিশ সরকারও চেয়েছিল ফিলিস্তিনের মাটিতে ইহুদিদের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্র গঠন করতে। ব্রিটেনের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড আর্থার জেমস বেলফোর তাদের আগ্রহের কথা জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন ইহুদি আন্দোলনের নেতা ব্যারন রটসচাইল্ডকে। তৎকালীন ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সে চিঠি কুখ্যাত ‘বেলফোর ডিক্লারেশন’ হিসেবে পরিচিত।
১৯৩৩ সালের পর থেকে জার্মানির শাসক হিটলার ইহুদিদের প্রতি কঠোর হতে শুরু করেন। জীবন বাঁচাতে জাহাজে করে হাজার হাজার ইহুদি অভিবাসী ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে আসতে থাকে। তখন ফিলিস্তিনি আরবরা বুঝতে পারে যে, তাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ছে। ফিলিস্তিনি আরবরা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য বিদ্রোহ করে। তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল ব্রিটিশ সৈন্য এবং ইহুদিরা। কিন্তু আরবদের সে বিদ্রোহ কঠোর হাতে দমন করে ব্রিটিশ বাহিনি।
১৯৩০-র দশকের শেষের দিকে ব্রিটেন চেয়েছিল হিটলারের নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অবস্থান জোরালো করতে। সেজন্য আরব এবং ইহুদি দুপক্ষকেই হাতে রাখতে চেয়েচিল ব্রিটেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইহুদিনিধনের প্রেক্ষিতে সোভিয়েত ইউনিয়ন, ব্রিটেন ও জার্মানিসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে খুটে খুটে ইহুদিদের এনে জড়ো করা হয় ফিলিস্তিনে। বিশ্বযুদ্ধকালে ৩২ হাজার ইহুদি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়। হিটলার কর্তৃক লাখ-লাখ ইহুদি হত্যার পর নতুন আরেক বাস্তবতা তৈরি হয়।
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার পর যেসব ইহুদি বেঁচে ছিলেন তাদের জন্য জন্য কী করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তখন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইহুদিদের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্র গঠনের চিন্তা আরো জোরালো হয়। আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান ইসরাইল রাষ্ট্রের পক্ষে জোরালো অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি ফিলিস্তিনে আরো বেশি সংখ্যায় ইহুদি পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু ব্রিটেন বুঝতে পারছিল যে, এতো বিপুল সংখ্যক ইহুদিদের ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডে নিয়ে গেলে সেখানে গৃহযুদ্ধ বাঁধব। এ সময় ইহুদিদের সশস্ত্র দলগুলো ব্রিটিশ সৈন্যদের উপর হামলা চালানো শুরু করে। ইউরোপ থেকে ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে জাহাজে বোঝাই হয়ে আসা হাজার-হাজার ইহুদিদের বাধা দেয় ব্রিটিশ বাহিনী। ইহুদি সশস্ত্র দলগুলো ব্রিটিশ বাহিনীর উপর তাদের আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
তাদের উদ্দেশ্য ছিল এমন একটি পরিস্থিতির তৈরি করা যাতে ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের জন্য ব্রিটেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়। তখন সমাধানের জন্য ব্রিটেনের উপর চাপ বাড়তে থাকে।
এরপর বাধ্য হয়ে ব্রিটেন বিষয়টিকে জাতিসংঘে নিয়ে যায়। ১৯৪৭ সালের নভেম্বর মাসে ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডে দুটি রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় জাতিসংঘ। একটি ইহুদিদের জন্য এবং অন্যটি আরবদের জন্য। ইহুদিরা মোট ভূখণ্ডের ১০ শতাংশের মালিক হলেও তাদের দেয়া হয় মোট জমির ৫৫ ভাগ। কিন্তু আরবদের জনসংখ্যা এবং জমির মালিকানা ছিল আরবদের দ্বিগুণ। অথচ তারা পেল ৪৫ ভাগ।
স্বভাবতই আরবরা এ সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি। তারা জাতিসংঘের এ সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেয়।
জাতিসংঘের এ সিদ্ধান্তের পর আরব এবং ইহুদিদের মধ্যে দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়। এ অবস্থার মধ্যে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ছেড়ে যাবার জন্য ব্রিটিশ সৈন্যরা দিন প্রস্তুতি গ্রহণ করে। ইহুদিদের ছিল বিচক্ষণ নেতৃত্ব। এর বিপরীতে আরবদের কোন নেতৃত্ব ছিল না। ইহুদিরা বুঝতে পেরেছিল যে, নতুন রাষ্ট্র গঠনের পর আরবরা তাদের ছেড়ে কথা বলবে না। সম্ভাব্য যুদ্ধের জন্য আগে থেকেই তৈরি ছিল ইহুদিরা। সবার দৃষ্টি ছিল জেরুজালেম শহরের দিকে। মুসলমান, ইহুদি এবং খ্রিস্টানদের জন্য পবিত্র এ জায়গা। জাতিসংঘ যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল সেখানে জেরুজালেম আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা ছিল। কিন্তু আরব কিংবা ইহুদি- কোন পক্ষই সেটি মেনে নেয়নি। ফলে জেরুজালেম শহরের নিয়ন্ত্রণের জন্য দু’পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠেছিল।
১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে ইহুদীরা আরবদের উপর তীব্র আক্রমণ শুরু করে। যেহেতু আরবদের মধ্যে কোন সমন্বয় ছিল না সেজন্য ইহুদিরা একের পর এক কৌশলগত জায়গা দখল করে নেয়। ১৯৪৮ সালের ১৪ই মে ফিলিস্তিন ছেড়ে চলে যায় ব্রিটেন। সেদিন রাতেই ইহুদি নেতারা স্বাধীন ইসরাইলি রাষ্ট্রের ঘোষণা করেন। ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্মের এক ঘন্টার মধ্যেই একসাথে পাঁচটি আরব দেশ, যেমন মিশর, ইরাক, লেবানন, জর্ডান এবং সিরিয়া ইসরাইল আক্রমণ করে। তাদের সৈন্য সংখ্যা ছিল প্রায় ত্রিশ হাজারের মতো। অন্যদিকে ইসরায়েলের সৈন্য সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৫ হাজার। কিন্তু আরব দেশগুলোর মধ্যে কোন সমন্বয় ছিল না। তাছাড়া আরব নেতৃত্ব একে অপরকে বিশ্বাস করতো না।
জেরুজালেম দখলের জন্য আরব এবং ইসরায়েলের মধ্যে শুরু হয় তীব্র লড়াই। লড়াইয়ের এক পর্যায়ে ইসরায়েলি বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। তাদের অস্ত্রের মজুত শেষ হয়ে যায়। আর কিছুদূর অগ্রসর হলেই মিশরীয় বাহিনী তেল আবিবের দখলে নিতে পারবে। নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে ইসরাইল ও তার পৃষ্ঠপোষক ব্রিটেনে এবং যুক্তরাষ্ট্রের চতুরতায় জাতিসংঘের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। যুদ্ধবিরতির সময় দুপক্ষই শক্তি সঞ্চয় করে। তবে পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষকরা ইসরাইলকে সব ধরনের সামরিক সহায়তা দিয়ে অনেক শক্তিশালী করে তোলে। তখন চেকোস্লাভাকিয়ার কাছ থেকে আধুনিক অস্ত্রের চালান আসে ইসরায়েলের হাতে। যুদ্ধ বিরতি শেষ হলে নতুন করে আরবদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। একর পর এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে নেয় ইহুদিরা। তেল আবিব এবং জেরুজালেমের উপর তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হয়।
অনেকে মনে করেন ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ যেভাবে দু’টি দেশের স্বীকৃতি দিয়েছিল, সেটি যদি ফিলিস্তিনীরা মেনে নিতো তাহলে ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েল নামের দুটি দেশ এখন পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করতো। তারা যদি যুদ্ধবিরতির ফাঁদে পা না দিত তাহলেও হয়ত যুদ্ধের মাধ্যমে চূড়ান্ত ফয়সালা হতো, নিশ্চিহ্ন হতো নবসৃষ্ট ইসরাইল রাষ্ট্র। সবাই স্বীকার করেন যে, আরব দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা না থাকার কারণেই ১৯৪৮ সালের যুদ্ধে তারা পরাজিত হয়েছে এবং ইসরায়েল দেশটির জন্ম ও স্থায়ী হতে পেরেছে। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধে ইসরাইল গোলান মালভূমিসহ আরো বেশকিছু জায়গা নিজেদের অধিকারে নেয়। এরপর থেকে নতুন নতুন স্থানে ইসরাইলি বসতি স্থাপন করে চলেছে ইহুদি রাষ্ট্রটি। নিজভূমে উদ্বাস্তুতে পরিণত হচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। গাজা ও রামাল্লায় সংকুচিত হয়ে পড়েছে তাদের ঠিকানা। যখনই ফিলিস্তিনিরা প্রতিবাদ করছে তখনই ঝরছে তাদের জীবন ও রক্ত। রক্তের এ ধারা সহজে বন্ধ হবে এমনটা আশা করা যায় না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ইসরাইল নামক সন্ত্রাসী ও কৃত্রিম রাষ্ট্রটিকে প্রথম স্বীকৃতিদানকারী রাষ্ট্র হলো সোভিয়েত ইউনিয়ন, যারা নিপীড়িত মানুষের পক্ষীয় শক্তি হিসেবে নিজেদের পরচিয় দিত।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ