স্বাস্থ্য খাতের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনের সমালোচনা করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি জানতে চান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের কোন জায়গায় কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে? কেউ এমন তথ্য দিতে পারবে না বরং অন্য অনেক খাতের কোটি টাকা বিদেশ চলে গেছে।
সোমবার (১২ জুন) জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহমুদ মনোয়ারের ১ম মৃত্যুবার্ষিকীতে এক শোক সভা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে টিআইবি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে। এটা খুবই দুঃখজনক। করোনা প্রতিরোধে বিশ্বের সব দেশ করেছে বাংলাদেশের। বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। অথচ
টিআইবি ঘরে বসে একটি সুন্দর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আমরা করোনা শনাক্ত করতে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি এমন মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছে। আমরা করোনা শনাক্তে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। স্বাস্থ্যখাতে কোনো দুর্নীতির ঘটনা ঘটেনি।
গত মঙ্গলবার (৮ জুন) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে করোনা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে সুশাসনে ঘাটতি থাকার কথা উল্লেখ করে টিআইবি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। একইসাথে করোনা মোকাবিলায় আগামী দিনের জন্য ১৯টি সুপারিশ তুলে ধরে সংস্থাটি।
সেখানে উল্লেখ করা হয়, করোনা প্রতিরোধের কার্যক্রমে কোন ব্যবস্থা দেওয়া হয় নি। রোগ শনাক্তকরণ, লকডাউন, চিকিৎসা, টিকা ক্রয় ও বিতরণে স্বচ্ছতা, সুশাসন এবং প্রয়োজনীয় সমন্বয় ছিল না।
জাহিদ মালেক বলেন, তারা (টিআইবি) বলছে রোগীদের জন্য আমরা কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা করিনি। অথচ সারাদেশে ১৫ হাজার বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে শুধুমাত্র করোনা চিকিৎসার জন্য। যে কারণে ভারতের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এখনো অনেক দেশ যথাযথভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
মন্ত্রী বলেন, করোনার মধ্যে আইসিইউ বাড়াতে পারিনি বলে টিআইবি যে দাবি করছে এটা সঠিক নয়। গত বছর যেখানে তিন থেকে চারশোটি আইসিইউ ছিল, সেখানে এখন ১ হাজারের বেশি আইসিইউর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, এটা শুধুমাত্র জনগণের কাছে ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য প্রকাশ করা হয়েছে। করোনার জন্য যে সরঞ্জাম কেনা হয়েছে, তার ব্যবহার করা হয়নি। অথচ আমরা সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে সরঞ্জাম পৌঁছে দিয়েছি। এমন মিথ্যাচার আমরা গ্রহণ করি না।
বসুন্ধরার আইসোলেশন সেন্টার নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওটা চালু হলেও ছয় মাসে ছয়টা রোগী হয়েছে। এর পেছনে লাখ লাখ টাকা ভাড়া দেওয়ার কারণে সবার সঙ্গে আলোচনা করে আইসোলেশন সেন্টার থেকে সরঞ্জাম বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন যারা দুর্নীতি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অধিদফতরের ড্রাইভার থেকে শুরু করে যারা অন্যায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।