প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি সমাজের অবস্থা সম্পন্ন ব্যক্তিদের অনুরোধ করবো তারা যদি অন্তত একটি করে বাড়ি অসহায় পরিবারের জন্য নির্মাণ করে দেন তবে, মুজিব শতবর্ষে দেশে যেমন একটি পরিবারও গৃহহীন থাকবেনা, তেমনি সবাই মিলে আমরা নির্মাণ করবো এক মানবিক সোনার বাংলা।’
বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের দশম অধিবেশনে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মো. শহীদুজ্জামান সরকারের তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী স্পিকারের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
মুজিববর্ষে তার সরকারের কর্মসূচি সবার জন্য গৃহনির্মাণ প্রকল্পে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ হওয়া সত্বেও এদেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীনদের বাসস্থান নিশ্চিত করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দরিদ্র মানুষের ক্ষমতায়ন ও দারিদ্র বিমোচনে এ ধরনের কর্মসূচি বিশ্বের আর কোন সরকার প্রধান এ পর্যন্ত গ্রহণ করেননি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ৩ লাখ ১৯ হাজার ১৪২টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এরমধ্যে ব্যারাক নির্মাণের মাধ্যমে এক লাখ ৬৪ হাজার ৭৬৩টি পরিবারকে, জমি আছে ঘর নেই এরূপ এক লাখ ৫৩ হাজার ৭৭৯টি পরিবারকে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয়দের ৬শ’ পরিবারকে বিশেষ ডিজাইনের গৃহনির্মাণ করে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
তিনি বলেন,এছাড়া আশ্রয়ন -২ প্রকল্পের আওতায় উঁচু খাস জমির প্রাপ্যতা সাপেক্ষে পরিবার প্রতি ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্তো প্রদান পূর্বক প্রথম পর্যায়ে ৫৯ হাজার ৮০৩টি ভূমিহীন ও গৃহহীণ পরিবারের জন্য এক হাজার ২২ কোটি ৬৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা ব্যয়ে একক গৃহ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের শুরুতে গৃহহীনদের পুনর্বাসনে জাতির পিতার গৃহীত প্রথম পদক্ষেপ স্মরণ করে বলেন, জাতির পিতা ১৯৭২ সালের ২০ ফ্রেব্রুয়ারি তৎকালিন নোয়াখালির বর্তমান লক্ষীপুরের রামগঞ্জে চরপোড়াগাছা গ্রাম পরিদর্শনে গিয়ে অসহায় আশ্রয়হীন পরিবারগুলোর পুনর্বাসন শুরু করেন।
তিনি বলেন, ‘মুজিববর্ষে বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবেনা এবং তা বাস্তবায়নে সরকার নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।’
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কোভিড-১৯ মহামারী অভিঘাত সত্ত্বেও তার সরকার প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনার নীতি গ্রহণ করে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে ধান উৎপাদনে চতুর্থ স্থান থেকে তৃতীয় স্থানে উন্নীত হয়েছে। ফলে দেশে খাদ্য নিরাপত্তার ভিত্তি সুদৃঢ় হয়েছে। এ ছাড়া সবজি উৎপাদনে বিশ্বের তৃতীয়, আম উৎপাদনে সপ্তম, আলু উৎপাদনে অষ্টম এবং পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম স্থানে অবস্থান করে বাংলাদেশে আজ বিশ্বে কৃষি উন্নয়নের রোল মডেল।