ইরানের সবচেয়ে বয়স্ক পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসিন ফাকরিজাদেহ নিহত হয়েছেন। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাজধানী তেহরানের কাছে গাড়িতে হামলার পর হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কাজ’ আখ্যা দিয়েছেন।
শুক্রবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ওই মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত গবেষণা ও উদ্ভাবনী সংস্থার প্রধান মোহসিন ফাকরিজাদেহকে বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সন্ত্রাসী ও তার দেহরক্ষীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর গুরুতর আহত ফাকরিজাদেহকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে চিকিৎসক দল তাকে বাঁচাতে সবরকম চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। আর কিছুক্ষণ আগে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।’
পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ধারণা ইরানের গোপন পরমাণু কর্মসূচির প্রধান নেপথ্য ব্যক্তি হলেন মোহসিন ফাকরিজাদেহ। ২০১৪ সালে এক পশ্চিমা কূটনীতিক বলেছিলেন, ‘ইরান যদি কখনও (পারমাণবিক) অস্ত্রধারী হতে চায় তাহলে ফাকরিজাদেহ হবেন ইরানি বোমার জনক।’
পরমাণু বিজ্ঞানী ফাকরিজাদেহ এমন এক সময়ে হত্যার শিকার হলেন যখন ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সমৃদ্ধকৃত ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়াচ্ছে দাবি করে উদ্বেগ প্রকাশ করছে কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। তবে বেসামরিক জ্বালানি উৎপাদন কিংবা সামরিক অস্ত্র নির্মাণ উভয় ক্ষেত্রের জন্য প্রয়োজনীয় সমৃদ্ধকৃত ইউরেনিয়াম। ইরান বারবারই জোর দিয়ে বলে আসছে কেবলমাত্র শান্তিপূর্ণ উদ্দেশেই তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি চলছে।
২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ইরানের চার জন পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এসব হত্যাকাণ্ডে আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বি ইসরায়েল জড়িত বলে অভিযোগ করে আসছে ইরান। ২০১৮ সালের মে মাসে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত এক উপস্থাপনায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বিশেষভাবে মোহসিন ফাকরিজাদেহ’র নাম উল্লেখ করেন।
ইরানের রেভরল্যুশনারি গার্ডের কমান্ডার বলেছেন, ইতোমধ্যেই এই হত্যাকান্ডের প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।