ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঠিক করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অপেক্ষা ছিল, কবে এইচএসসি ও সমমানের মূল্যায়নের ফল ঘোষণা করা হবে। গতকাল শনিবার ফল প্রকাশের পর এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে কোন পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে, সে বিষয়ে প্রাথমিক কিছু সিদ্ধান্তও নিয়ে রেখেছে তারা।
তবে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে তাড়াহুড়ো চান না উপাচার্যদের কেউ কেউ। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে গত শিক্ষাবর্ষে যাঁরা ভর্তি হয়েছিলেন, তাঁদের শ্রেণিকক্ষে ক্লাস হয়নি বললেই চলে। তাঁদের পরীক্ষাও হয়নি। এ অবস্থায় তাড়াহুড়ো করে নতুন করে প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করা সমীচীন হবে না।
অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রস্তুতি যেমনই হোক, উচ্চশিক্ষায় আসনের চেয়ে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থী বেশি। এ কারণে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সবাই ভর্তি হতে পারবেন কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে। নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে এবার মোট পাস করেছেন ১৩ লাখ ৬৭ হাজার ৩৭৭ জন পরীক্ষার্থী।
এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তথ্য বলছে, উচ্চশিক্ষায় ভর্তি হওয়ার মতো আসন আছে সাড়ে ১১ লাখের মতো। এর ফলে পাস করা সব শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ নেই। এবার বেশির ভাগ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। এর মধ্যে ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবার প্রথমবারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেবে।
এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষাবিষয়ক কার্যক্রমের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেন, তাঁরা ৪ ফেব্রুয়ারি প্রস্তুতিমূলক সভা ডেকেছেন। তবে পরীক্ষার তারিখ ঠিক হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভায়। যদিও তাঁর প্রাথমিক ধারণা হলো, মেডিকেল ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার পরে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। তিনি মনে করেন, ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে তাড়াহুড়োর কিছু নেই। আর করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এলেই এই পরীক্ষা নিতে হবে।
সাত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে। তবে ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য আমির হোসেন গতকাল বলেন, এখন তাঁরা কবে, কীভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেবেন, তা ঠিক করবেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) পড়ানো হয় এমন কলেজ আছে ৮৬৭টি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন-অর-রশিদ বলেন, মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে তাঁরা ভর্তির কাজটি শেষ করতে চান। আর তাঁদের সমস্যা হবে না। কারণ, তাঁরা প্রচলিত নিয়মে ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করবেন। এ জন্য খোলার জন্য তাঁরা বসে থাকবেন না।
চারটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আলোচনা করলেও এখনো গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন, মার্চের আগে ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে বিভিন্ন অনুষদের ডিনরা বসে পরীক্ষার তারিখ ঠিক করবেন।