বাংলাদেশের আকাশে ১৪৪২ হিজরি সনের শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে রোজা ৩০টি পূর্ণ হবে। সে হিসেবে শুক্রবার (১৪ মে) দেশব্যাপী মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে।
বুধবার (১২ মে) রাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি মো. ফরিদুল হক খান।
এর আগে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা করতে সন্ধ্যা ৭টায় (বাদ মাগরিব) বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সদস্য ধর্ম সচিব মো. নুরুল ইসলাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মুশফিকুর রহমানসহ দেশের বরেণ্য আলেমরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে তা নিম্নোক্ত টেলিফোন ও ফ্যাক্স নম্বরে অথবা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক অথবা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানোর অনুরোধ জানায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন। চাঁদ দেখা গেলে ৯৫৫৯৪৯৩, ৯৫৫৫৯৪৭, ৯৫৫৬৪০৭ ও ৯৫৫৮৩৩৭-টেলিফোন এবং ৯৫৬৩৩৯৭ ও ৯৫৫৫৯৫১ এ ফ্যাক্স করতে বলা হয়।
প্রধান ঈদ জামাত সকাল ৭টায়
করোনা সংক্রমণ রোধে এবার খোলা মাঠে ঈদের নামাজের জামাত হচ্ছে না। ঈদ জামাত হবে মসজিদের ভেতরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে। এবার হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত হচ্ছে না। হচ্ছে না শত বছরের ঐতিহ্য, ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানের ঈদ জামাতও। তবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রতি বছরের ন্যায় ঈদের ৫টি জামাত স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত হবে।
পড়ুন: বায়তুল মোকাররমে ঈদের ৫ জামাত
মঙ্গলবার (১১ মে) ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বায়তুল মোকাররমে প্রথম জামাতটি অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। ইমামতি করবেন এ মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান।
এরপর সকাল ৮টায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে, এতে ইমামতি করবেন ইমাম মুফতি মুহিববুল্লাহিল বাকী নদভী, তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায় এ জামাতের ইমামতি করবেন মাওলানা এহসানুল হক, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায়, এতে ইমামতি করবেন মাওলানা মহিউদ্দিন কাসেম এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল পৌনে ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে। এই জামাতে ইমামতি করবেন মাওলানা ওয়ালিয়ূর রহমান খান।
এদিকে এবার ঈদ জামাত আয়োজনে কোনো আনুষ্ঠানিকতা নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বলেন, এবারের ঈদে আমাদের পক্ষ থেকে খোলা মাঠে ঈদ জামাত আয়োজনের কোনো উদ্যোগ থাকছে না। তবে সরকারের নির্দেশনা মেনে মসজিদগুলোয় ঈদ জামাত আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল বাসার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক এ বছর ডিএনসিসি আওতাধীন এলাকায় খোলা মাঠে কোনো ধরনের ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে না।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নির্দেশনায় ঈদ উপলক্ষে কোলাকুলি ও হাত মেলানো থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে সবাইকেই মাস্ক পরতে হবে এবং নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থ ব্যক্তির সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে।