চলতি মে মাস দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। দেশে সারা বছর ধরে যে পরিমাণে দুর্যোগ হয়, তার মধ্যে মে মাসে হয় সবচেয়ে বেশি। তবে মে মাস তো বটেই, সারা বছরের হিসাবে বজ্রপাতকে অন্য কোনো দুর্যোগ টপকে যেতে পারবে না। কারণ, ২০১৯–২০ সালের মধ্যে দেশে এক বজ্রপাতই হয়েছে ৩১ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি। এর ২৬ শতাংশের বেশি তৈরি হয় মে মাসে। বাংলাদেশের বজ্রপাত নিয়ে আমার এক দীর্ঘমেয়াদি গবেষণায় এসব তথ্য পেয়েছি।
তবে বাংলাদেশের মানুষের সৌভাগ্য যে এ বজ্রপাতের সব কটি শরীরে এসে আঘাত করে না। তাই যদি হতো, তাহলে কী হতো, তা কল্পনা করা কঠিন। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর সংবাদ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তবে তার মানে যে আগের চেয়ে বজ্রপাতের সংখ্যা বেড়ে গেছে, তা কিন্তু নয়। আমরা ভূ-উপগ্রহ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছি, বজ্রপাত আগের চেয়ে বাড়েনি। এ পরিস্থিতিতে সরকার ২০১৬ সালে বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করে। এ স্বীকৃতিতে বজ্রপাতের সংখ্যা কমবে বা বাড়বে না। বজ্রপাতে মৃত্যু বা হতাহতের সংখ্যা কমাতে হলে আমাদের এ দুর্যোগের ধরন বুঝতে হবে। এটি কখন, কেন ও কীভাবে আমাদের ওপরে আঘাত হানে। জানতে হবে কীভাবে এ থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি।
দেশে বছরে ৮৪ লাখ বজ্রপাত হয়। এর মধ্যে এপ্রিল থেকে জুনে হয় ৭০ শতাংশ।
২০১৩-২০২০ (জুন পর্যন্ত) দেশে মোট ১ হাজার ৮৭৮ জন বজ্রপাতে মারা গেছে।
মারা যাওয়া ব্যক্তিদের ৭২ শতাংশ কৃষক।
তিন ধরনের বজ্রপাত
আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৫–২০২০ সালে বাংলাদেশে তিন ধরনের বজ্রপাত সংঘটিত হয়। এক মেঘ থেকে আরেকটি মেঘে বা আন্তমেঘ, একই মেঘের এক স্থান থেকে আরেক স্থান বা অন্তমেঘ এবং মেঘ থেকে ভূমিতে। এ সময়ে ওই তিন ধরনের বজ্রপাতের মোট পরিমাণ ছিল ৫ কোটি ৫০ লাখ। এগুলোর দৈনিক ও ঋতুভিত্তিক সংঘটনে আবার ভিন্নতা দেখা গেছে। যেমন ২৪ ঘণ্টা হিসাবে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় রাত ৮-১০টার মধ্যে, ১২ শতাংশ।
ঋতুভিত্তিক বিন্যাসেও বজ্রপাতের ধরনে পার্থক্য রয়েছে। মার্চ থেকে মে মাসে প্রায় ৫৯ শতাংশ, আর মৌসুমি বায়ু আসার সময়, অর্থাৎ জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৩৬ শতাংশ বজ্রপাত হয়। তবে মোট বজ্রপাতের প্রায় ৭০ শতাংশ হয় এপ্রিল থেকে জুনে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশে আসার আগের দুই মাসে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে বজ্রপাতের প্রকোপ অন্যান্য জেলার তুলনায় অনেক বেশি হয়। বর্ষাকালে রাঙামাটি, সুনামগঞ্জ ও চট্টগ্রাম বজ্রপাত সংঘটনের দিক থেকে প্রথম তিনটি জেলা। শীতকালে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট আর মৌসুমি-উত্তর ঋতুতে রাঙামাটি, চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয়।
অন্যদিকে দেশে শুধু মেঘ থেকে ভূমিতে সেপ্টেম্বর ২০১৫-২০২০ সংঘটিত বজ্রপাতের সংখ্যা ছিল ২ কোটি ২৭ লাখ ৮ হাজার ৩০৬টি। এর মধ্যে মে মাসে সর্বোচ্চ ২৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ, জুনে ১৭ দশমিক ২ শতাংশ, আর সেপ্টেম্বরে ১৫ দশমিক ৬২ শতাংশ বজ্রপাত হয়েছিল। দৈনিক সংঘটনের দিক থেকে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত হয় ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ। আর মেঘ থেকে ভূমিতে আঘাত হানা বজ্রপাতের পরিমাণ মাত্র দুটি ঋতুতে সীমাবদ্ধ। এ দুই ঋতুতে সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোনা, রাঙামাটি ও কুড়িগ্রামে সর্বাধিক বজ্রপাত হয়ে থাকে। শীতকালে পটুয়াখালী, বাগেরহাট আর খুলনায় বেশিসংখ্যক মেঘ থেকে ভূমিতে বজ্রপাত হয়। সুতরাং উল্লিখিত পরিসংখ্যান থেকে বজ্রপাতের স্থানিক ও কালিক ধরন, বিশেষ করে মেঘ থেকে ভূমিতে সংঘটিত বজ্রপাতের বৈশিষ্ট্য পরিষ্কার।
বজ্রপাতের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও বাংলাদেশ
পৃথিবীতে প্রতি মিনিটে ৮০ লাখ বজ্রপাত সৃষ্টি হয়। উন্নত দেশগুলোতেও একসময় বজ্রপাতে বহু মানুষের মৃত্যু হতো। কিন্তু তারা বজ্রনিরোধক খুঁটি বা পোল স্থাপন করা, মানুষকে সচেতন করার মধ্য দিয়ে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে এনেছে। তবে তার আগে বৈজ্ঞানিক তথ্যভিত্তিক ব্যবস্থাপনা ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাভিত্তিক সচেতনতা সৃষ্টি করেছে উন্নত দেশগুলো। এতে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের দেশগুলোসহ পূর্ব এশিয়ায় বজ্রপাতে হতাহতের সংখ্যা বহুলাংশে কমেছে। যদিও বজ্রপাত সম্পর্কে অনেক কল্পকাহিনি প্রচলিত, বিজ্ঞানের কল্যাণে বজ্রপাতের কারণ পরিষ্কার হয়েছে। সহজ ভাষায় বায়ুমণ্ডলে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক বৈদ্যুতিক চার্জের গঠন ও পৃথকীকরণে বজ্রপাত সংঘটিত হয়। সারা বছরের হিসাবে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত সংঘটিত হয় ভেনেজুয়েলার মারাকাইবো হ্রদে। অন্যদিকে আফ্রিকার কঙ্গো অববাহিকার অবস্থান দ্বিতীয়।
কীভাবে ও কেন বজ্রপাত হয়
মেঘ থেকে ভূমিতে ধাবিত বজ্রপাত মানুষ ও সম্পদের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ। মনে রাখা দরকার, বায়ুমণ্ডলে শক্তি বা এনার্জির পুনর্বিন্যাসে ঝড় ও বজ্রপাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই এ ধরনের বায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগ পৃথিবীর তাপ পরিস্থিতিকে একটি সুষম বা ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় রাখে। বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের ব্যাপ্তি অনেক এলাকাজুড়ে হয়, কিন্তু বজ্রপাত নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ। আবার দিনের সব সময় বজ্রপাত হয় না, অর্থাৎ এটা সংঘটনের স্থান ও কাল জানলে হতাহতের সংখ্যা বহুলাংশে কমানো সম্ভব। উল্লিখিত পরিসংখ্যান থেকে বজ্রপাতের স্থানিক ও কালিক ধরন, বিশেষ করে মেঘ থেকে ভূমিতে সংঘটিত বজ্রপাতের বৈশিষ্ট্য পরিষ্কার।
যদি কেউ খালি মাঠে বা পানির পাশে দাঁড়িয়ে থাকে, তবে সমতল ভূমির তুলনায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটির উচ্চতা বেশি হওয়ায় সে সরাসরি বজ্রপাতের শিকার হতে পারে। এমন প্রাণহানিকে সরাসরি আঘাত বলা হয়। অন্যদিকে কেউ যদি বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, যেমন মুঠোফোনে কথা বলে বা কম্পিউটারে কাজ করে অথবা টিনের ঘরে টিনের দেয়ালে হেলান দিয়ে থাকে, তবে বজ্রপাত থেকে নির্গত অতিরিক্ত ভোল্টেজের সংস্পর্শে মৃত্যুবরণ করতে পারে সে। শস্য বপন বা আহরণের কাজে মানুষ মূলত দুই পা আড়াআড়ি করে সারিবদ্ধ অবস্থায় জমিতে কাজ করে। তাঁরা স্টেপ ভোল্টেজের কারণে মৃত্যুবরণ করতে পারেন।
গবেষণার তথ্যানুসারে ২০১৩-২০২০ (জুন পর্যন্ত) দেশে মোট ১ হাজার ৮৭৮ জন বজ্রপাতে মারা গেছেন। বজ্রপাতে দেশে বার্ষিক প্রাণহানির হার প্রতি ১০ লাখে ১ দশমিক ৬ জন। কিন্তু এপ্রিল-মে মাসে প্রতিদিন প্রায় দুজন বজ্রঝড়ের কারণে মারা যায়। কারণ, মার্চ থেকে জুনে কৃষকেরা বোরো ধান রোপণ ও কাটার কাজে ব্যস্ত থাকেন। তাঁরা মাঠে দাঁড়িয়ে সারিবদ্ধভাবে কাজ করেন। ফলে তাঁরা বজ্রপাতের আঘাতের প্রথম শিকার হন। তাই কৃষিকাজ করার সময়ে কৃষকদের মৃত্যুর হার বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি, ৭০ শতাংশ। বাড়িতে ফেরার পথে বজ্রপাতে মারা যান ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ। আর গোসল, মাছ ধরা অবস্থায় মারা যান ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে মোট প্রাণহানির ২১ শতাংশ হয়ে থাকে ঘরের অভ্যন্তরে। অথচ একটু সচেতন হলেই বজ্রপাত থেকে মৃত্যু ঠেকানো যেতে পারে।
কীভাবে রক্ষা পাবেন
যুক্তরাষ্ট্রে বজ্রপাতে বিপদাপন্ন পরিমাপের একটা জনপ্রিয় পদ্ধতির নাম ৩০-৩০ বা ‘৩০ সেকেন্ড ৩০ মিনিট’। ৩০ সেকেন্ড: বজ্রপাত দেখা ও শোনার সময় থেকে ৩০ সেকেন্ড গুনতে হবে। যদি দুটির মধ্যকার সময় ৩০ সেকেন্ডের কম হয়, তবে সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে হবে। অথবা আপনি যদি বজ্রঝড়ের শব্দ শুনতে পান, তবে নিরাপদ স্থানের সন্ধান করা সবচেয়ে নিরাপদ। কেননা, বজ্রপাত সাধারণত ঝড়ের সময় বা পরপরই হয়ে থাকে। ৩০ মিনিট: বজ্রঝড়ের শেষ শব্দ শোনার পর থেকে ৩০ মিনিট নিরাপদ স্থানে অবস্থান করতে হবে। নয়তো বজ্রপাতে মৃত্যু বা জখমের ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। তবে বজ্রপাতের ঝুঁকি থেকে বাঁচার জন্য সচেতনতা বা সতর্কতা অত্যাবশ্যক।
যদি ঘরের ভেতরে থাকেন, তবে নিম্নোক্ত সতর্কতা জরুরি
ক. ফোন, কম্পিউটার এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম থেকে দূরে থাকুন।
খ. প্লাম্বিং যেমন বাথটাব, রান্নাঘরের ধাতব পদার্থ থেকে দূরে থাকুন।
গ. বজ্রঝড়ের সময় জানালা, দরজা বা যেকোনো প্রবেশদ্বার থেকে দূরে থাকতে হবে।
ঘ. বজ্রপাতের সময় কোনো অবস্থাতেই কংক্রিটের ওপর শোবেন না বা দেয়ালের সঙ্গে হেলান দিয়ে থাকবেন না।
বজ্রপাত বা বজ্রঝড়ের সময় যদি বাইরে থাকেন, তবে ঝুঁকি এড়াতে নিচের বিষয়গুলো পালন করা বাধ্যতামূলক
ক. উঁচু স্থান অবশ্যই এড়াতে হবে বা নদী, পুকুর, খাল–বিল ইত্যাদির আশপাশে থাকা যাবে না।
খ. কোনো অবস্থাতেই ভূমিতে শোবেন না বা বিচ্ছিন্ন কোনো বড় গাছের নিচে দাঁড়াবেন না।
গ. বৈদ্যুতিক তারের বেড়া, ধাতব পদার্থ বা সংশ্লিষ্ট বস্তু (টাওয়ার) থেকে দূরে থাকুন। কেননা, ধাতব পদার্থের মাধ্যমে বজ্রপাত অনেক দূর পর্যন্ত চলাচল করতে পারে।
ঘ. পুকুর, নদী–নালা বা হ্রদে মাছ ধরা বা নৌকা ভ্রমণ যেকোনো উপায়ে পরিহার করতে হবে।
ঙ. অনেক মানুষ একসঙ্গে থাকলে (যেমন খেলার মাঠে) ছড়িয়ে–ছিটিয়ে যেতে হবে। বজ্রঝড়ের সময় মানুষ জড়ো অবস্থায় থাকলে অনেকজনের একসঙ্গে প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে।
উল্লিখিত বিষয়গুলো বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য প্রমাণিত কৌশল, যা ব্যক্তির অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবর্তিত হতে পারে। বজ্রপাতের হাত থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে ৩০-৩০ পদ্ধতি অত্যন্ত ফলপ্রসূ। দেশে বজ্রপাত থেকে মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাসে স্থানীয় প্রশাসনকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক কৌশল গুরুত্বপূর্ণ। যেমন স্থানীয় প্রশাসন অতিরিক্ত বজ্রপাতপ্রবণ জেলাগুলোতে বজ্রপাত সংঘটনের সময় সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে পারে বা নির্দিষ্ট সময়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে নিরুৎসাহিত করে পারে। যেমন বিকেল থেকে সন্ধ্যার পর বজ্রপাতের সংখ্যা বেশি বলে জনগণকে এ বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া যেতে পারে। অন্যদিকে স্থানীয় নেতারা বা এনজিও লোকজনের মধ্যে বজ্রপাতের হাত থেকে বাঁচার জন্য এলাকাভিত্তিক সচেতনতা বাড়াতে পারে। এগুলোর মধ্যে বজ্রঝড়ের সময় কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয় ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে হবে।
যদিও সরকার বজ্রপাত থেকে রক্ষার জন্য তালগাছ লাগানোর কার্যক্রম হাতে নিয়েছে বলে জানা যায়। তবে বলা দরকার, তালগাছের বাড়তে অনেক সময় লাগে। তা ছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে দাঁড়িয়ে থাকা যেকোনো গাছ বজ্রপাতের সময় কোনো পদ্ধতি কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা সময়ই বলবে। যদিও বজ্রপাত সংঘটন ঠেকানোর কোনো উপায় আমাদের জানা নেই। কেননা, এর মূল কারণ দৈনন্দিন আবহাওয়া। তবে উল্লিখিত কৌশলগুলো মানুষের মধ্যে, বিশেষ করে অতিরিক্ত বজ্রপাতপ্রবণ জেলাগুলোতে ছড়িয়ে দিতে পারলে প্রাণহানি বহুলাংশে হ্রাস করা সম্ভব।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সঙ্গে বজ্রপাত সম্পর্কিত গবেষণা বলছে, বিশ্বের সর্বত্র বজ্রপাত সমহারে বাড়ছে না। সম্প্রতি স্যাটেলাইট উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায় আঞ্চলিক ক্ষেত্রে বজ্রপাতের ওপর জলবায়ু উষ্ণায়নের প্রভাব সুস্পষ্ট, অর্থাৎ বিশ্বব্যাপী না বাড়লে ও দক্ষিণ এশিয়া বা ক্রান্তীয় অঞ্চলের অনেক দেশে বজ্রপাতের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় বৃদ্ধির হার দশকওয়ারি ০.০৯৬ ফ্ল্যাশ প্রতি বর্গকিলোমিটারে। সুতরাং সামনের দিনে মানুষ ও সম্পদের ঝুঁকি আরও বাড়বে। দেশে বজ্রপাতের মৌসুম চলছে। এমতাবস্থায় গণসচেতনতা বাড়ানো ছাড়া বায়ুমণ্ডলীয় এ দুর্যোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করার পথ সামান্য। নতুবা বাংলার জনপ্রিয় প্রবাদ ‘বিনা মেঘে বজ্রপাত’–এর মতো ঝড় ও বজ্রপাত অনেকের জীবন ও জীবিকাকে বিপদাপন্ন করে তুলতে পারে। এ ক্ষেত্রে দুটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ: ১. কখন ও কোথায় হতে পারে, ২. ঝড় ও বজ্রপাতকালীন নিয়মাবলি অনুসরণ করা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে দুটি ক্ষেত্রেই আমাদের ঘাটতি রয়েছে। তাই ব্যবস্থাপনার দিকটি এখনো উপেক্ষিত।
লেখক: আশরাফ দেওয়ান
শিক্ষক ও গবেষক, কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়া