করোনায় আক্রান্ত হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাড়িতেই সুস্থ হচ্ছেন আক্রান্ত ব্যক্তি। সবার ক্ষেত্রে হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। আর সেজন্য প্রয়োজন রোগীর সঠিক যত্ন। সেই আক্রান্ত ব্যক্তির যত্ন ও চিকিৎসায় মনোযোগী হতে হবে পরিবারের সদস্যদের। বাড়িতে করোনায় আক্রান্ত রোগী থাকলে কীভাবে তার যত্ন নিতে হবে এবং কী কী সতর্কতা মেনে চলতে হবে সে সম্পর্কে নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। চলুন জেনে নেয়..
যদি পরিবারের কোনো একজন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হন এবং বাকিরা সুস্থ থাকেন, এক্ষেত্রে সবাই বাড়িতেই থাকতে পারবেন। তবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাকিদের থেকে আলাদা রাখতে হবে। মেনে চলতে হবে চিকিৎসকের যাবতীয় পরামর্শ। যাদের বয়স ষাটের নিচে এবং উপসর্গ সামান্য, তারা বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিতে পারেন। তবে যাদের ক্ষেত্রে ফুসফুস কিংবা হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা রয়েছে তাদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে। কারণ তাদের ক্ষেত্রে সংক্রমণ আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
পরিবারের সব সদস্যকেই করোনা সংক্রান্ত সমস্ত বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। অবশ্যই নির্দিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। এর কারণ হলো, করোনা রোগীর ক্ষেত্রে যেকোনো সময়ে অবস্থার অবনতি হতে পারে। তাই হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হলে দ্রুত সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা কক্ষে রাখতে হবে। যদি তা একান্তই সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে অন্তত এক মিটার দূরত্ব রাখতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিসহ পরিবারের সবাইকে সার্জিক্যাল মাস্ক পরে থাকতে হবে।
ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির কক্ষে ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা ভালো রাখা জরুরি। আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনোভাবেই বদ্ধ ঘরে রাখবেন না।
আক্রান্ত ব্যক্তি একা একটি কক্ষে থাকলেও তাকে যতটা সম্ভব মাস্ক পরেই থাকতে হবে। তার কক্ষে কেউ প্রবেশ করলে তাকে অন্তত এক মিটার দূরত্ব মেনে চলতে হবে।
এই অসুখ যেহেতু অন্যসব অসুখের মতো নয়, তাই বাইরে থেকে আসা কেউ যেন আক্রান্ত ব্যক্তির কক্ষে ঢুকতে না পারে। সবচেয়ে ভালো হয় বাইরের কাউকে বাড়িতে আসতে না দিলে। এতে সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় কমবে।
সবাই মিলে নয়, আক্রান্ত ব্যক্তির সেবা নির্দিষ্ট একজন করুন। যিনি রোগীর দেখাশোনা করছেন, বাকি সদস্যদের থেকে তিনিও দূরত্ব বজায় রাখুন। আক্রান্ত ব্যক্তির সেবা-যত্নের জন্য একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিই যথেষ্ট।
আক্রান্ত ব্যক্তির কক্ষে প্রবেশ করলে অবশ্যই মাস্ক পরে থাকবেন। মাস্কে স্পর্শ করবেন না। কক্ষ থেকে বের হয়ে মাস্কটি ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিনে ফেলবেন এবং হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে নেবেন। প্রয়োজনে গোসল করে নিতে পারেন।
করোনায় আক্রান্ত রোগীর থালা-বাসন, বিছানার চাদর, তোয়ালে সবকিছুই আলাদা হবে। এগুলো যেন কোনোভাবেই অন্য কেউ ব্যবহার না করেন। রোগীর কক্ষ নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
রোগীর ব্যবহার্য যেসব জিনিস ফেলে দেবেন তা অবশ্যই আগে ডিসপোজেবল প্যাকেটে মুড়িয়ে নিতে হবে। নয়তো জীবাণু ছড়ানোর আশঙ্কা থেকে যাবে।