পাবনারসআতাইকুলা থানায় গুলিতে নিহত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হাসান আলীর লাশ সোমবার (২২ মার্চ) ভোররাতে কেশবপুরের গ্রামের বাড়িতে পৌছালে গ্রামজুড়ে শোকের মাতম শুরু হয়। তার মৃত্যু নিয়ে পরিবারর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, আত্মহত্যায় নয়, ৪১তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে ছুটি চাওয়ায়কে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডার জেরে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
হাসানের বাবা জব্বার আলী জানান, তার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে কেউ মেরে ফেলেছে। বুধবার হাসান তার সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলে, হাসান তাকে জানায় ৪১তম বিসিএস পরীক্ষা দিতে শুক্রবার খুলনায় আসবে। কিন্তু থানার ওসি তাকে ছুটি দেবে না। এ নিয়ে ওসির সঙ্গে হাসানের বাকবিতণ্ডা হয়।
হাসান আলীর দাদি জবেদা বেগম বলেন, শনিবার সন্ধ্যার পরও আমার সাথে হাসানের ফোনে কথা হয়েছে। তাকে খুলনায় পরীক্ষা দিতে যেতে দেয়নি বলে মন খারাপ। আমি তাকে বাড়ি আসতে বললে জানিয়েছিল মঙ্গলবারে বাড়ি আসবে। কিন্তু তার আগেই তারে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে।
সোমবার সকাল ৮ টায় গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে নিহত হাসান আলীর লাশ দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজায় অংশ নেন কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জসীম উদ্দীন, এলাকার চেয়ারম্যান আলা উদ্দীন, ইউপি সদস্য কামারুজ্জাম কামালসহ সর্বস্তরের মানুষ।
এর আগে আতাইকুলা থানার ছাদ থেকে রোববার সকালে হাসানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের বক্তব্য, পারিবারিক অস্বচ্ছলতা ও ঋণের কারণে নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
আতাইকুলা থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, রাতে খাবার খেয়ে থানার ব্যারাকের একটি কক্ষে ছিলেন এসআই হাসান আলী। রাত ২টার দিকে তিনি মোবাইল ফোনে কথা বলার জন্য থানার ছাদে যান। সেখানে তিনি রাতের কোনো এক সময় পিস্তল দিয়ে নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন।
হাসান আলী ৩৭তম আউটসাইট ক্যাডেট হিসেবে গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশে যোগ দেন। এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পাবনার আতাইকুলা থানায় এসআই হিসেবে যোগদান করেন তিনি।
মা আলেয়া বেগম বিলাপ করতে করতে বলেন, শনিবার রাত ১২ টায় মোবাইল ফোনে ছেলের সঙ্গে তার কথা হয়। শুক্রবার খুলনায় তার বিসিএস পরীক্ষা ছিল। কিন্ত ছুটি না পাওয়ায় তার পরীক্ষা দেওয়া হলো না। ছেলে তাকে জানিয়েছে আতাইকুলা থানার ওসি স্যার অন্যদের ছুটি দিলেও তাকে (ছেলে) ছুটি দেননি।