সিকি শতাব্দীর মধ্যে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে মন্দায় পড়েছে ভারত। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) ভারতের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে সাত শতাংশ কমেছে। ভারতের জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তর গতকাল শুক্রবার জিডিপি সংক্রান্ত এসব তথ্য প্রকাশ করেছে।
সাধারণত পরপর দুই প্রান্তিকে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হলে অর্থনীতি মন্দায় পড়েছে বলে বলা হয়। ভারতের অর্থনীতিও পরপর দুই প্রান্তিকে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি দেখল। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে এসব তথ্য জানানো হয়।
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি থেকে মুদ্রাস্ফীতি— নভেল করোনাভাইরাসের ধাক্কায় ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা বেহাল। তবে এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিতেই ধীরে ধীরে লকডাউন শিথিল করার পথে হেঁটেছিল দেশটির সরকার। তবে তাতে খুব একটা লাভ হয়নি বলে মনে করা হচ্ছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপিতে বড়োসড় ধস নামে। একইভাবে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকেও জিডিপি সংকোচন হল। চলতি অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপির হার নেমে দাঁড়িয়েছিল ২৩ দশমিক ৯ শতাংশে।
অর্থনীতিতে পরপর দুই বা ততোধিক প্রান্তিকে যদি জিডিপির হার পড়ে যায়, তখন তাকে অর্থনৈতিক মন্দা বলা হয়। সে অনুযায়ী, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকেও অর্থনীতির সংকোচন হওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতে মন্দা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, নভেল করোনাভাইরাসজনিত মহামারি ভারতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক মাত্রায় প্রভাব ফেলেছে।
আন্তর্জাতিক অর্থনীতি বিশ্লেষক সংস্থা ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ শিলন শাহ সিএনএনকে বলেন, ‘অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ইতিবাচক ফলাফল ভারতের জন্য সুখবর। সবচেয়ে বড় অর্ডারটি দিয়ে রেখেছে ভারত। আর টিকার উৎপাদনও হবে ভারতের মাটিতে।’
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের অর্থনীতি এখনো নিম্নগতিতে এগোলেও চীন মহামারি থেকে নিজেদের অর্থনীতিকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। কড়া লকডাউন আরোপ করে শত শত বিলিয়ন ডলার বাঁচিয়েছে চীন। বড়ো অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র চীনই হয়তো বছরের শুরুর থেকে বছরের শেষ নাগাদ অর্থনীতিকে ভাল অবস্থানে নিতে পারবে।