প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষ সকলের ওপর রমজানের রোজা ফরজ। রোজা ভাঙা একটি বড় গুনাহের কাজ। একটি রোজার বিনিময়ে টানা দুই মাস রোজা রাখলেও ওই একটি রোজার সমকক্ষ হবে না। রোজা আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে সম্পর্ক তৈরির চেষ্ট মাধ্যম।
আল্লাহ তা’আলা কিছু কিছু মানুষকে রমজানের রোজা রাখা ও না রাখার ক্ষেত্রে অবকাশ দিয়েছেন। এখানে আলোচনা করা হবে মুসাফিরের রোজার সংক্ষিপ্ত কিছু মাসআলা:
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)
- শরয়ি সফর করে থাকলে (অর্থাৎ ৪৮ মাইল তথা ৭৭ কিলোমিটার ভ্রমণ করেছেন যিনি), তার জন্য রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে। তবে মুসাফিরের জন্য উত্তম হচ্ছে, যদি কষ্ট কম হয়— তাহলে রোজা পালন করা। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৪; আল-হিদায়া : ১/২২১; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২০
- সফর অবস্থায় নিয়ত করে রোজা রাখা শুরু করলে, তা ভাঙা জায়েজ নয়। কেউ ভেঙে ফেললে গুনাহগার হবে। তবে কাফফারা দিতে হবে না। শুধু কাজা করবে।রদ্দুল মুহতার : ২/৪৩১
- কষ্ট অস্বাভাবিক হলে রোজা রাখা মাকরুহ। এ অবস্থায় রোজা না রেখে পরে তা কাজা করে নিতে হবে। আছিম (রহ.) বলেন, আনাস (রা.)-কে সফরকালে রোজা রাখার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, ‘যে রোজা রাখবে না, সে অবকাশ গ্রহণ করল। আর যে রোজা রাখল, সে উত্তম কাজ করল।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ৬/১৩২)
- যে ব্যক্তি মুকিম (স্থায়ী বাসিন্দা) অবস্থায় সাহরি খেয়ে সফর শুরু করেছে, তার জন্য সফরের অজুহাতে রোজা ভাঙা জায়েজ নয়। ভাঙলে গুনাহগার হবে, তবে শুধু রোজার কাজা ওয়াজিব হবে।ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/২০৬
- কোনো মুসাফির সফরে থাকার কারণে যদি রোজা না রাখে; কিন্তু দিন শেষ হওয়ার আগেই মুকিম হয়ে যায়। তার উচিত হবে রমজানের মর্যাদা রক্ষার্থে সেদিনের অবশিষ্ট সময় পানাহার থেকে বিরত থাকবে। আর পরে এ রোজার কাজা আদায় করে নেবে। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৬/২২১; হাদিস : ৯৪৩৬-৯৪৩৮)