করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত ঈদগাহের পরিবর্তে নিকটস্থ মসজিদে আদায়ের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। মসজিদে জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করাসহ কয়েকটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সাখাওয়াত হোসেন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদের নির্দেশনার আলোকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করায় দেশব্যাপী ধর্মীয় স্থাপনাসমূহে যথাযথ সুরক্ষা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অতি জরুরি। এরইমধ্যে মসজিদে নামাজ আদায়ে কতিপয় নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ জারি করা নির্দেশনাসহ বিশেষ সতর্কতামূলক বিষয় অনুসরণ করে নিম্নবর্ণিত শর্তসাপেক্ষে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত আদায় করতে হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়, ইসলামী শরিয়তে ঈদগাহ বা খোলা জায়গায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত আদায়ের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সারা বিশ্ব এবং আমাদের দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিজনিত কারণে মুসল্লিদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে এ বছর ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদের নামাজের জামাত নিকটস্থ মসজিদে আদায় করতে অনুরোধ করা হলো। প্রয়োজনে একই মসজিদে একাধিক জামাত করা যাবে।
মসজিদে ঈদের জামাত আদায়ে যেসব নির্দেশনা মানতে হবে-
১) করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতে মসজিদে অজু করার জায়গায় সাবান/হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে।
২) ঈদের নামাজের জামাতের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিরা প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে পারবেন।
৩) প্রত্যেকে নিজ নিজ বাসা থেকে অজু করে মসজিদে আসতে হবে এবং অজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
৪) ঈদের নামাজের জামাতে আসা মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।
৫) ঈদের নামাজ আদায়ের সময় কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।
৬) শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি ঈদের নামাজের জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
৭) সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই প্রতিপালন করতে হবে।
৮) করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে মসজিদে জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করতে হবে।
করোনাভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আল-আমিন এর দরবারে দোয়া করার জন্য খতিব ও ইমামদের অনুরোধ করা যাচ্ছে। খতিব, ইমাম ও মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন।
উল্লিখিত নির্দেশনা লঙ্ঘিত হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উপরোক্ত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে।