অধিকাংশ মার্কিন সেনা দেশে ফিরে গেছে। ন্যাটোর বাহিনীও আর নেই। এই অবস্থায় আঞ্চলিক রাজধানী দখলের চেষ্টা করছে তালেবান। তালেবান ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের অনেকগুলি জেলার দখল নিয়ে নিয়েছে। এবার তারা আঞ্চলিক রাজধানী আক্রমণ শুরু করলো।
বুধবার তারা পশ্চিম আফগানিস্তানে কালা-ই-নও আক্রমণ করে। শহরটি তিনদিক থেকে ঘিরে তালেবান আক্রমণ চাালাতে থাকে। তারা শহরের কিছুটা ভিতরে ঢুকেও পড়ে। কিন্তু আফগান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সেনা তাদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছে।
রয়টার্স জানাচ্ছে, তালেবানের উপর বিমান হামলা করে আফগান বিমান বাহিনী। তবে এএফপি এর আগে আঞ্চলিক গভর্নর হাসামুদ্দিন সামসকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছিল, তালেবান পুলিশের সদরদফতরের ভিতরে ঢুকে পড়েছিল। সেই সময় সেখানে বন্দিরা পালায়। শহরের সাধারণ মানুষও ভয় পেয়ে হেরাটের দিকে পালাতে শুরু করে।
পশ্চিম আফগানিস্তানের গ্রামের দিকের এলাকায় তালেবান তাদের আধিপত্য বিস্তার করেছে। এবার তারা শহরের দিকে এগোচ্ছ। তাদের লক্ষ্য হেরাট দখল করা। সামাজিক মাধ্যমে দেয়া ভিডিও থেকে দেখা যাচ্ছে, সশস্ত্র তালেবান মোটরবাইক করে শহরের দিকে যাচ্ছে।
আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তালেবানদের শহর থেকে বিতাড়িত করা হবে। তালেবানের তরফ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। সেনার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তালেবানের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশ কিছু সেনারও মৃত্যু হয়েছে।
ইরানের উদ্যোগে আলোচনা
ইরানের উদ্যোগে তেহরানে আলোচনায় বসলেন তালেবান নেতা ও আফগান সরকারের কর্মকর্তারা। সেখানে সাবেক আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট ইউনুস কানুনিও ছিলেন। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ তালেবান ও আফগান সরকারের মধ্যস্থতাকারীদের বলেছেন, তারা যেন কঠিন সিদ্ধান্ত নেন। আফগানিস্তানে ব্যর্থ হওয়ার জন্য তিনি অ্যামেরিকার নিন্দাও করেন।
ইরানের এই উদ্যোগ অবাক করার মতো। দোহায় তালেবান ও আফগান সরকারের প্রতিনিধিরা দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চালিয় যাচ্ছেন। সেই আলোচনা অবশ্য খুব একটা এগোচ্ছে না। তার মধ্যেই তালেবান এখন এলাকা দখলের কৌশল নিয়েছে। এই অবস্থায় ইরানও উদ্যোগী হলো।
গত সপ্তাহেই মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী বাগরাম বিমান ঘাঁটি ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে। এই বিমানঘাঁটিই ছিল তালেবান বিরোধী অপারেশনের কম্যান্ড সেন্টার। এর ফলে আফগান সেনারা যে বিমান বাহিনীর সাহায্য পেত, তা এখন অনেকটাই কমে গেছে। ফলে তালেবানের পক্ষেও এলাকা দখলের কাজটা অপেক্ষাকৃতভাবে সহজ হচ্ছে। সম্প্রতি তালেবান আক্রমণের মুখে পড়ে ২৮০ জন আফগান সেনা তাজিকিস্তান চলে গেছে।