এবারের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপের সেরা পারফর্মারদের নিয়ে একটি একাদশ তৈরি করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। যেখানে পাঁচ ম্যাচ হেরে সুপার টুয়েলভে বিদায় নেয়া বাংলাদেশের কোনও ক্রিকেটার নেই। একাদশের অধিনায়ক করা হয়েছে পাকিস্তানের বাবর আজমকে।
এছাড়া আইসিসির একাদশে নেই দুই ম্যাচ হেরে বিদায় নেয়া ভারতেরও কোনও ক্রিকেটার। তবে সেমিফাইনালে না উঠলেও, শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার দুইজন করে ক্রিকেটার জায়গা পেয়েছেন এই দলে। ফাইনালে খেলা নিউজিল্যান্ড দল থেকে শুধুই ট্রেন্ট বোল্ট আছেন, আইসিসির মোস্ট ভ্যালুয়েবল টিমে।
দলের ওপেনিং স্পটে জায়গা পেয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার ও জশ বাটলার। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ওয়ার্নারের ফর্ম নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, তখন তিনি বলেন, ‘‘আমার ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন তোলা হাস্যকর। আমি এটা নিয়ে হাসি। আমি সম্প্রতি খুব একটা ক্রিকেট খেলিনি।’’
সমালোচকদের তিনি মাঠেও পারফর্ম করে দেখিয়েছেন। ৩৫ বছর বয়সী এই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ১৪৬ স্ট্রাইক রেটে ২৮৯ রান তুলেঠেন এই টুর্নামেন্টে। সেমিফাইনালে ৪৯ এবং ফাইনালে ৫৩ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি।
টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটারের পুরষ্কার পেয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার, আইসিসির কমেন্টেটরদের প্যানেল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই প্যানেলে ছিলেন সাবেক তারকা ক্রিকেটার ইয়ান বিশপ, নাটালি জারমানোস এবং শেন ওয়াটসন সাথে সাংবাদিক লরেন্স বুথ এবং শাহীদ হাশমি।
ইয়ান বিশপ ব্যাখ্যা করেছেন কেন ডেভিড ওয়ার্নার টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটার, ‘‘বাবর আজম, জশ বাটলার ও অ্যাডাম জাম্পা তিনজনই হওয়ার কথা ছিল কিন্তু ডেভিড ওয়ার্নার টুর্নামেন্টে প্রভাব ফেলেছেন, বিশেষ নকআউট স্টেজে তিনি নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে প্যানেলকে তার দিকে নিয়ে গেছেন।’’
জশ বাটলার বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা লিমিটেড ওভার ব্যাটসম্যান, তিনি এই বিশ্বকাপেও প্রমাণ দিয়েছেন কেন তাকে সেরা বলা হয়। ৮৯ গড়, ১৫১ স্ট্রাইক রেটে ২৬৯ রান তুলেছেন বাটলার। বিশ্বকাপের একমাত্র সেঞ্চুরিটিও তিনিই করেছেন।
আইসিসির ঘোষিত একাদশের তিন নম্বরে আছেন বাবর আজম। তিনি ৬০ গড়ে ৩০৩ রান তুলেছেন। পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর ভারতের বিপক্ষে দলটির প্রথম বিশ্বকাপ জয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছেন। বাবর এখন টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়েরও এক নম্বর ব্যাটসম্যান। এই টুর্নামেন্টে চারটি ফিফটি হাঁকিয়েছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার চারিথ আসালাঙ্কা আছেন চার নম্বরে। তিনি ২৩১ রান তুলেছেন এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছেন ৪৯ বলে ৮০ রানের ইনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকার এইডেন মারকরাম আছেন পাঁচ নম্বরে।
২৭ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৬ বলে ৪০, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২৬ বলে ৫১ এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৫ বলে ৫২ রানের তিনটি ইনিংস খেলেন, তবে তার দল চারটি ম্যাচ জিতেও নেট রান রেটে পিছিয়ে থাকার কারণে সেমিফাইনালে যেতে পারেনি।
মইন আলী আছেন ছয় নম্বরে, তিনি এই দলে জায়গা পেয়েছেন ইউটিলিটি ক্রিকেটার হিসেবে যিনি ব্যাট হাতে ভূমিকা রাখেন নিয়মিত একই সাথে বল হাতেও কার্যকরী। সেমিফাইনালেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৭ বলে ৫১ রান তুলে অপরাজিত ছিলেন তিনি। প্রায় প্রতি ম্যাচেই উইকেট নিয়েছেন মইন আলী, বল হাতে খুব বেশি রানও দেননি তিনি।
সাত নম্বরে জায়গা পেয়েছেন শ্রীলঙ্কার উদীয়মান অলরাউন্ডার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা এই অলরাউন্ডার দ্রুতই বিশ্ব ক্রিকেটে বেশ প্রভাবশালী ক্রিকেটার হিসেবে জায়গা করে নিচ্ছেন। টি-টোয়েন্টি বোলারদের র্যাংকিংয়ে তিনি এক নম্বরে আছেন। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন।
বোলার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন তিনজন। অ্যাডাম জাম্পা, জশ হ্যাজলউড, ট্রেন্ট বোল্ট এবং আনরিখ নরকিয়া। হ্যাজলউড ও বোল্ট- দুজন ফাইনালের সেরা বোলিং ফিগার অর্জন করেছেন। জ্যাম্পা টুর্নামেন্ট জুড়েই ছিলেন দারুণ। আর দ্বাদশ ক্রিকেটার হিসেবে আছেন পাকিস্তানের শাহীন শাহ আফ্রিদি।
এক নজরে একাদশ:
১. ডেভিড ওয়ার্নার (অস্ট্রেলিয়া)- ব্যাটসম্যান
২. জশ বাটলার (ইংল্যান্ড)- ব্যাটসম্যান
৩. বাবর আজম (পাকিস্তান) – ব্যাটসম্যান (অধিনায়ক)
৪. চারিথ আসালাঙ্কা- (শ্রীলঙ্কা)- ব্যাটসম্যান
৫. এইডেন মারকরাম- (দক্ষিণ আফ্রিকা)- ব্যাটসম্যান
৬. মইন আলী- (ইংল্যান্ড)- অলরাউন্ডার
৭. ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা- (শ্রীলঙ্কা)- অলরাউন্ডার
৮. অ্যাডাম জাম্পা (অস্ট্রেলিয়া)- বোলার
৯. জশ হ্যাজলউড (অস্ট্রেলিয়া)- বোলার
১০. ট্রেন্ট বোল্ট- (নিউজিল্যান্ড)- বোলার
১১. আনরিখ নরকিয়া (দক্ষিণ আফ্রিকা)- বোলার১