মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপে যেনো কোন ভাবেই থামছে না। দিন দিন নতুন রূপ নিচ্ছে এ ভাইরাসটি। অনেক দেশেই দেখা দিয়েছে দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় ঢেউ। বিশেষ করে ভারতসহ গোটা দক্ষিণ এশিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিশেষজ্ঞরা ব্যাপকহারে করোনা পরীক্ষার ওপর জোর দিচ্ছেন। কিন্তু করোনা পরীক্ষার নির্ভরযোগ্য পদ্ধতিটি কী?
প্রথম দিকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার হার কম ছিল এবং অনেকের মধ্যে পরীক্ষা করানোর ব্যাপারে অনীহা কাজ করলেও বিশ্ববাসী এখন পরীক্ষার দিকে ঝুঁকছে। পরীক্ষার জন্য একাধিক পদ্ধতি থাকলেও নির্ভরযোগ্যতার বিচারে শীর্ষে রয়েছে আরটি-পিসিআর পদ্ধতি। গোটা বিশ্বে এ পদ্ধতিটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় নমুনা পরীক্ষার এই পদ্ধতিটি কেন সবচেয়ে কার্যকর।
অনেক দেশের চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, আরএটি বা র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের তুলনায় আরটি-পিসিআরে প্রায় নির্ভুল ফল পাওয়া সম্ভব। অর্থাৎ কেউ সংক্রমিত হয়েছেন কি না তা প্রায় নির্ভুলভাবে এই পদ্ধতির মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারছেন চিকিৎসকরা।
করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য আরটি-পিসিআর পদ্ধতির কয়েকটি বিষয় নিয়ে বিজ্ঞানীরা একমত। চলুন জেনে নেয় কোন কোন বিষয়ে বিজ্ঞানীরা এই বিষয়ে একমত প্রকাশ করছেন;
প্রথমত, কারও শরীরে যদি করোনাভাইরাস না থাকে তা এই পরীক্ষায় নিশ্চিতভাবেই ধরা পড়বে। দ্বিতীয়ত, কেউ আক্রান্ত হলেও তা শনাক্ত করার ক্ষমতা ৬৭ শতাংশ। চতুর্থত, এই পরীক্ষার মাধ্যমে মিথ্যা পজিটিভ রিপোর্ট আসার ভয় নেই। তবে মিথ্যা নেগেটিভের আশঙ্কা ৩০-৩৫ শতাংশ।
পঞ্চমত, কোনো উপসর্গ না দেখা দিলেও, সংক্রমিত হলে আরটি-পিসিআরে তা শনাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এই পরীক্ষা করা গেলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাছাড়া, হাসপাতালের পাশাপাশি ছোট ছোট ল্যাবেও এটি করা যেতে পারে।
তবে আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় সময় কিছুটা বেশি প্রয়োজন হয়। কিন্তু নির্ভুল রিপোর্ট পেতে এটি অনেকাংশেই নির্ভরযোগ্য। উপসর্গ না থাকলেও যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, এই পরীক্ষার মাধ্যমে অনেক দেশেই তাদের চিহ্নিত করে আলাদা করে রেখে চিকিৎসা দিতে পারছে। ফলে সংক্রমণ অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হয়েছে। এসব কারণে মহামারিকালে পরীক্ষা পদ্ধতি হিসেবে জনপ্রিয় আরটি-পিসিআর।