ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া মুনজেরিন শহীদ এখন পড়ছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। দেশের সর্ববৃহৎ অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম টেন মিনিটস স্কুলের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান এবং ইংরেজির শিক্ষক তিনি। তুমুল জনপ্রিয় হওয়া তার ইংরেজি ভিডিও লেকচারগুলো তৈরির কাজ তিনি শুরু করেছিলেন ২০২০ সালে করোনার কারণে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর। সম্প্রতি তিনি জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে বাংলাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।
মুনজেরিন বলেন, নিজেকে তারকার চেয়ে আমি শিক্ষক হিসেবেই বেশি দেখি। আমি নিজেকে ভীষণ লাকি মনে করি যে, যেই কাজ করতে আমার এতো ভালো লাগে তা করতে গিয়ে আমি মানুষের এত প্রশংসা পেয়েছি। এটা বড় একটা সৌভাগ্যের ব্যাপার। আমি সবার প্রতি খুবই কৃতজ্ঞ। আশা করি সবাই আমাকে এভাবে সাপোর্ট করে যাবেন।
ছোটবেলায় কী হতে চেয়েছিলেন জানতে চাইলে মুনজেরিন বলেন, একেক সময়ে একেক ধরনের এইম ইন লাইফ ছিল। অনেক ছোটবেলায় আমি ডাক্তার হতে চাইতাম। তারপর ডাক্তারদের মেডিকেলের গাইডবুক দেখে আমার মনে হয়, ডাক্তারি আমাকে দিয়ে হবে না। তারপর ভাবলাম, আর্কিটেকচার পড়বো। মাঝখানে অনেক দিন ধরে পাইলট হওয়ারও ইচ্ছা ছিল। এ রকম অনেক ধরনের ইচ্ছাই ছিল।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ইংলিশ পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। ইংরেজি শিক্ষা নিয়ে কাজ করার সুযোগ হয়েছে টেন মিনিটস স্কুলে এসে। সবকিছু মিলিয়ে পরে ভাবলাম, শিক্ষকতা আমার জন্য অনেক ভালো। ইংরেজি বিষয়টা আমার স্কুল থেকেই অনেক বেশি ভালো লাগতো। আমি স্কুলে থাকতে ইংরেজি পড়তে, গল্পের বই পড়তে, অন্যদেরকে ইংরেজি পড়াতে খুব বেশি পছন্দ করতাম। এ কারণেই ভাবলাম, এই বিষয়টা ইউনিভার্সিটিতে উঠে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত।
টেন মিনিটস স্কুলের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সময় আমার বেশ কয়েকজন বন্ধু টেন মিনিটস স্কুলে কাজ করতো। তাদের মাধ্যমে আমি টেন মিনিটস স্কুল সম্পর্কে জানতে পারি। তখন আমার লেখালেখি করার অনেক অভ্যাস ছিল। এ কারণে আমি ছোট ছোট এডুকেশনাল ব্লগ লিখে টেন মিনিটস স্কুলে কাজ করা শুরু করি। এরপর টেন মিনিট স্কুলের অন্যান্য কাজে শিফট করি। যেমন, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট, কুইজ ম্যানেজমেন্টে কাজ করি, সবশেষে এইচআরে (মানবসম্পদ বিভাগে) ঢুকি। এখনো আমি টেন মিনিটস স্কুলে এইচআর প্রধান হিসাবে কাজ করি।
নিজের প্রকাশিত বই সম্পর্কে তিন বলেন, গত বছরের জুন, জুলাইয়ের দিকে আমরা অনলাইনে স্পোকেন ইংলিশের বই রিলিজ করি, যেটা অনলাইনে রিলিজের কিছুদিনের মধ্যেই বেস্ট সেলার হয়ে যায়। এই পরিমাণে কোনদিনই একটা অনলাইন পিডিএফ বই মানুষ কখনো নেয় নাই। আর সবার জন্য ভোকাবুলারি বইটা এ বছরের শুরুর দিকে আমরা ছাড়ি। দুটোই এই বছরের বইমেলাতে হার্ডকপি ভার্সন হিসাবে আসে।
তিনি বলেন, প্রথমে যখন বইটা লিখি, তখন দুই সপ্তাহের মধ্যে বইটা লিখে প্রকাশ করা হয়েছে। হার্ডকপি হিসাবে প্রকাশ করার আগে অনেকবারই বইটা সংস্করণ করা হয়েছে। যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম, তখন দুই তিনটা চাকরি একসাথে করতাম। টেন মিনিটস স্কুল তার মধ্যে একটা ছিল। আমি লেখক, শিক্ষিকা, আমি এইচআরে কাজ করছি, শিক্ষার্থী হিসাবে এখন অক্সফোর্ডে আছি। এটা ছাড়া আপাতত আর কিছু করছি না।