প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ সকল মুসলিমের ওপর রমজানের রোজা ফরজ। বিশেষ করে নারীদের রোজা পালনের ক্ষেত্রে কিছু মাসআলা ও সুযোগ রয়েছে, যেগুলো জানা থাকলে রোজা পালন করা সহজ।
‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার। (সূরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৩)’
- নারী যদি নিজের ঋতুস্রাবের পবিত্রতার নিদর্শন দেখতে পায়; যার দ্বারা বুঝতে পারে যে সে এখন পবিত্র হতে যাচ্ছে, তাহলে রাতেই রোজার নিয়ত করবে। আর যদি পবিত্রতার নিদর্শন না দেখা যায়, তাহলে ভেতরে তুলাজাতীয় কিছু লাগিয়ে দেবে। যদিপরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, তাহলে রোজা রাখবে। যদি দ্বিতীয়বার হায়েজের রক্ত এসে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে ফেলবে।
- স্বামীর অনুমতি ব্যতীত নারীরা রমজানের বাইরে রোজা রাখবে না। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৮২)
- নারী যদি নিজের অভ্যাস অনুযায়ী বুঝতে পারে যে, আগামীকাল তার ঋতুস্রাব হবে। তাহলেও সে রোজা ভাঙবে না। তবে ঋতুস্রাব দেখতে পেলে রোজা ভাঙবে। (আপকে মাসায়েল, খণ্ড : ৩, পৃষ্ঠা : ২৭৮)
- সন্তান জন্মদান পরবর্তী স্রাব থেকে নারীরা যদি ৪০ দিন হওয়ার আগেই পবিত্র হয়ে যায়, তাহলে রোজা রাখবে এবং নামাজ আদায়ের জন্য গোসল করে নেবে। আর যদি ৪০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও স্রাব অব্যাহত থাকে, তাহলে সে রোজা রাখবে এবং গোসল করে নেবে। কেননা তার রক্ত ইস্তেহাজা (রোগবিশেষ) হিসেবে গণ্য করা হবে। (বেহেশতি জেওর, পৃষ্ঠা : ১৬০; শরহে বেকায়া, খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা : ১২০)
- ঋতুবতী নারীর জন্য উত্তম হলো- নিজের স্বাভাবিক অবস্থায় থাকা। আল্লাহর ফয়সালার ওপর সন্তুষ্ট থাকা। ঋতুস্রাব বন্ধে কোনো কিছু ব্যবহার না করা। বরং ঋতু অবস্থায় রোজা ছেড়ে দেওয়া; যেহেতু শরিয়ত সুযোগ রেখেছে। পরে ঋতুস্রাবের সময়কালীন যে রোজাগুলো রাখতে পারেনি, সেগুলো কাজা করে নেওয়া। কেননা উম্মুল মুমিনিন ও আগেরকার পুণ্যবতী নারীরা এমনটিই করেছেন। তবে কেউ যদি ওষুধ দিয়ে রক্ত বন্ধ করে দেয়, তাহলেও রোজা হয়ে যাবে। (আপকে মাসায়েল, খণ্ড : ৩, পৃষ্ঠা : ২০৭)
- ঋতুবতী নারী যদি সূর্য হেলার আগেই যদি পবিত্র হয়ে যায় এবং রোজার নিয়ত করে, তাহলে তার ফরজ আদায় হবে না। (শামি, খণ্ড : ৩, পৃষ্ঠা : ৩৮৫)
- কোনো মেয়ে যদি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও লজ্জায় তা মা-বোনের কাছে প্রকাশ করে না এবং রোজাও রাখে না; তাহলে তার ওপর তাওবা করা ও ছুটে যাওয়া রোজার কাজা করা ওয়াজিব।