বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই, কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই…বাবুই হাসিয়া কহে- নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা। রজনীকান্তের স্বাধীনতার সুখ কবিতার মতোই এ মৌসুমে বাবুই পাখিরা নিজেদের স্বাধীন আবাস নির্মাণে ব্যস্ত সময় পার করে।
সাধারণত পাখিরা ডিম দিয়ে, তাতে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটানোর জন্য বাসা নির্মাণ করে। তাছাড়া, ঝড়-বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য তো বটেই। কোনো পাখি অন্যের বাসা দখল করে, কেউ বা নিজেই তৈরি করে। যেসব পাখি বাসা নির্মাণ করে, সেসব পাখির মধ্যে বাবুইয়ের নির্মাণশৈলী যে অনন্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাবুই পাখিরা সাধারণত তাল, খেজুর ও নারকেল গাছকেই বাসা তৈরির জন্য উপযুক্ত মনে করে। প্রথমে তারা পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝতে চেষ্টা করে। পরিবেশ অনুকূলে হলে বাসা নির্মাণ কাজ শুরু করে। কাঁচা-পাকা ঘাস যোগাড় করে বাসা তৈরির কাজ শুরু করে।
বাসা বোনার কৌশলের জন্য বাবুই পাখিদের তাঁতী পাখি বলা হয়। ঠোঁট দিয়ে ঘাসের আস্তরণ সরিয়ে বুক দিয়ে তা পালিশ করে বাসার দেয়াল নির্মাণ করে। বাবুই পাখিদের বাসা দেখলে মনে হতে পারে যেন কলসি উল্টো করে ঝোলানো রয়েছে। ঝড়ের সময় বাবুই পাখিদের বাসা ভয়াবহভাবে ঝুলতে থাকে। দেখে মনে হতে পারে এই বুঝি ছিঁড়ে পড়ল। কিন্তু সহজে তা পড়ে না।
বাবুই পাখিরা বাসা নির্মাণে এতটাই দক্ষ যে, এরা বাসায় কয়েকটি কক্ষ তৈরি করে। বাবুই পাখিদের বাসা বেশ নান্দনিক। বাসার নির্মাণশৈলি থেকে শুরু করে সব কিছুই বেশ নান্দনিক।
গ্রীষ্মে এই পাখিদের বাসা তৈরি বেশ চোখে পড়ে। বাবুইয়ের বাসা তৈরির অনিন্দ্য সুন্দর ছবিগুলো চুয়াডাঙ্গা সদরের পাখির গ্রাম বেলগাছি থেকে ক্যামেরাবন্দি করেছেন পাখিপ্রেমী স্কুল শিক্ষক বখতিয়ার হামিদ।