করোনাকালীন অনলাইন শিক্ষার জন্য স্মার্টফোন (মোবাইল) কিনতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে ৮ হাজার শিক্ষার্থী পাচ্ছেন বিনা সুদে আট হাজার টাকা করে ঋণ। তবে বিনা সুদের এ ঋণ পেতে বেশকিছু শর্ত রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসব শর্তের সমালোচনা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর।
বিনা সুদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ঋণের বিষয়ে আজ বুধবার গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে নুর এ কথা বলেন।
নুর বলেন, নানা সমালোচনার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি উদ্যোগ নিয়েছে। এটি ভালো, প্রশংসনীয়। কিন্তু এর শর্ত এবং সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মানুষ হাসাহাসি করবে। মানসম্মত একটি স্মার্টফোন কিনতে হলে অন্তত ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা লাগে।
এ ঋণ পেতে শিক্ষার্থীদের আগামী ১৫ জুনের মধ্যে নির্ধারিত আবেদন ফরম পূরণ করতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর অথবা অধ্যয়নকালীন চারটি কিস্তিতে বা এককালীন আসল টাকা শিক্ষার্থীরা পরিশোধ করতে পারবেন বলে তখন জানানো হয়েছিল। ওই তালিকায় সবচেয়ে বেশি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৮ হাজার ৫৫৬ শিক্ষার্থী ঋণের জন্য আবেদন করেছিলেন।
একটি ভালো স্মার্টফোন কিনতে ভালো বরাদ্দের প্রয়োজন বলে মনে করেন নুর। তিনি বলেন, আট হাজার টাকায় যে মোবাইল ফোন পাওয়া যায়, সেটি ভালো কাজ করবে না। তারপর আবার সেখানে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, ফরম পূরণ করা, সেটি আবার জমা দেওয়া। এসব কারণে আমার মনে হয় ১০ ভাগ শিক্ষার্থীও এই ঋণ নেন কি না সন্দেহ আছে।
বিনা সুদে ঋণ পেতে যেসব শর্তের কথা বলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন-
১) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক/স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত অস্বচ্ছল শিক্ষার্থী যাদের নাম “শিক্ষার্থীদের সফটলোন” তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে কেবলমাত্র তারাই আবেদন করতে পারবেন।
২) ঋণের সর্বোচ্চ সিলিং ৮ হাজার টাকা, যাহা সুদ মুক্ত। এসব টাকা সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রদান করা হবে।
৩) শিক্ষার্থীদের জরুরী ভিত্তিতে সোনালী ব্যাংক লিঃ/জনতা ব্যাংক লিঃ/অগ্রণী ব্যাংক লিঃ এর যে কোন একটি শাখায় নিজ নামে ব্যাংক একাউন্ট খুলে স্ব স্ব বিভাগ/ইনস্টিটিউটকে জানাতে হবে।
৪) সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীকে স্মার্টফোন ক্রয়ের ভাউচারটি বিভাগ/ইনস্টিটিউট এর মাধ্যমে সফটলোন অনুমোদন কমিটির সদস্য সচিব এর নিকট জমা দিতে হবে।
৫) ঋণের অর্থ সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়নকালীন সময়ে এককালীন অথবা ৪টি সমান কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে।
৬) ঋণের সম্পূর্ণ অর্থ ফেরৎ না দেওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর নামে কোন ট্রান্সক্রিপ্ট ও সাময়িক/মূল সনদ ইস্যু করা হবে না।
৭) ১৫ জুনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সফটলোন তালিকায় নিবন্ধিত শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে অন্তর্ভুক্ত Du Forms এর অন্তস্থ Student Softloan থেকে ডাউনলোড করে পূরণের পর স্ব স্ব বিভাগ/ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান/পরিচালকের নিকট প্রেরণ করতে হবে।