হজ ও কোরবানির মাস জিলহজ। আগামী ১১ জুলাই চাঁদ দেখা গেলে ওই দিন সন্ধ্যা থেকেই শুরু হবে মাসটি। সে কারণে ১১ জুলাই সন্ধ্যার আগেই কিছু কাজ আছে; যা সম্পন্ন করা জরুরি। কেননা জিলহজ মাস শুরু হলে কোরবানির আগ পর্যন্ত ১০ দিন কিছু কাজ থেকে বিরত থাকা প্রিয় নবির সুন্নাত। হাদিসের বর্ণনা থেকে তা সুস্পষ্ট।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যারা কোরবানি দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে, তারা যেন জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর থেকে কোরবানি সম্পন্ন করা পর্যন্ত নিজ নিজ চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকে। (মুসলিম, মিশকাত)
হজরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা আরও বর্ণনা করেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন জিলহজ-এর ১০ দিন আসে এবং তোমাদের কেউ কোরবানি করার নিয়ত করে; তখন সে যেন নিজের চুল ও চামড়ার কোনো অংশ না কাটে।’ (মুসলিম)
পড়ুন: ছয় প্রকার পশু দিয়ে কোরবানি জায়েজ
সুতরাং যারা কোরবানি করার ইচ্ছা পোষণ করে তাদের উচিত, জিলহজ মাস শুরু হওয়ার আগে নিজেদের চুল ও নখ কেটে নেওয়া। এগুলো প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত এবং সাওয়াবের কাজ। হিসাব অনুযায়ী ১০ ও ১১ জুলাই সন্ধ্যার আগে যে কাজগুলো করা জরুরি; তাহলো-
১. মাথার চুল কাটা কিংবা মাথা ন্যাড়া করা।
২. হাত ও পায়ের নখ কাটা।
৩. মোচ ছেঁটে ছোট করে নেওয়া।
৪. শরীরের অন্যান্য অযাচিত পশম (নাভি ও বগলের নিচের অযাচিত পশম) কাটা কিংবা পশম বিলুপ্তকারী ওষুধ ব্যবহার করা।
হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী জিলকদ মাসের শেষ দিকে উল্লেখিত কাজগুলো সম্পন্ন করা উচিত। যাতে জিলহজ মাসের শুরু থেকে কোরবানির দিন পর্যন্ত চুল, মোচ, হাত ও পায়ের নখ এবং শরীরের অযাচিত লোম কাটার প্রয়োজন না হয়।
ইসলামিক স্কলারদের মত
১. ইমাম আবু হানিফা রাহমাতুল্লাহি আলাইহির মতে, জিলহজ মাসের প্রথম দশদিন অর্থাৎ কোরবানির সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত নখ, চুল ইত্যাদি কাটা মাকরূহ বা নিষিদ্ধ নয়, তবে না কাটাই উত্তম।
২. ইমাম শাফেঈ রাহমাতুল্লাহি আলাইহির মতে, উল্লেখিত কাজগুলো করা নিষিদ্ধ (মাকরূহে তানজিহি) তবে হারাম নয়। তবে ওলামায়ে কেরামগণের মতে কোরবানির পশু জবাইয়ের পর চুল, নখ ইত্যাদি কাটা মুস্তাহাব।
অনেকেই কোরবানি দাতার জন্য কোরবানির আগে এ কাজগুলো করাকে হারাম বলেছেন। না, তা ঠিক নয়; বরং একান্তই যদি কেউ কোরবানির আগে এ কাজগুলো করে অর্থাৎ চুল, চামড়া বা নখ কাটে; তবে তার জন্য কোনো কাফফারা বা জরিমানা নেই। তবে উল্লেখিত আমলগুলোকে ফোকাহায়ে কেরাম মুস্তাহাব বলেছেন। কেউ এর ব্যতিক্রম করলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।